নিউজ ডেস্ক : রাষ্ট্রপতি পদটি লাভজনক নয়। তাই দুদকের সাবেক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিনের রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হতে কোনো বাধা নেই।
এমনটি জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন ভবনে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
আইনে আছে যে, দুদক কমিশনাররা লাভজনক কোনো পদে যেতে পারেন না। রাষ্ট্রপতি পদ লাভজনক, নাকি লাভজনক নয়, এটি নিয়ে একটি প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ব্যাখ্যাটি কী- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, দুদকের আইনে বলা আছে যে, কমিশনাররা লাভজনক পদে যেতে পারবেন না। কিন্তু আপনারা জানবেন যে, নির্বাচন কমিশন যখন এটি করেছে, তখন আইন-কানুন জেনেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিচারপতি সাহাবুদ্দীন যখন রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন, তখন এ নিয়ে কোর্টে একটি মামলা হয়েছিল। কারণ বিচারপতির ক্ষেত্রেও একই আইন যে, তারা লাভজনক পদে যেতে পারবেন না।
তিনি বলেন, ওই মামলায় হাইকোর্ট একটি রায় দিয়েছিলেন। সেখানে হাইকোর্ট বলে দিয়েছেন যে, না, এতে কোনো বাধা নেই এবং সেই আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আপিলও হয়নি। যেহেতু আমাদের সামনে উচ্চ আদালতের একটি সুনির্দিষ্ট উদাহরণ রয়েছে যে, মহামান্য রাষ্ট্রপতির পদকে লাভজনক পদ বলা যাবে না এবং ওই রায়ে বলা আছে, লাভজনক পদ বলতে বুঝাবে প্রজাতন্ত্রের যারা কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের, অতএব এটি তার (মো. সাহাবুদ্দিন) জন্য প্রযোজ্য নয়। তার রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হতে আইনগত কোনো বাধা নেই।
আরেক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, লাভজনক পদের বিষয়ে একেবারে স্পষ্টভাবে বলা আছে যে, লাভজনক পদ বলতে কী বুঝায়, যদিও তালিকা দেওয়া নেই, তবে লাভজনক পদের ক্ষেত্রে বলা আছে যে, প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত এবং কোনো প্রতিষ্ঠানে যদি সরকারের ৫০ ভাগের অধিক অর্থ থাকে, তাহলে সেই পদে নিয়োগকে বলা হবে লাভজনক পদ। তো এখানে রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রী, তারা কিন্তু প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী নন। এগুলো সাংবিধানিক পদ।
সাবেক এই ইসি সচিব বলেন, যেহেতু সাংবিধানিক পদ, সেহেতু লাভজনক পদের ডেফিনেশনে (সংজ্ঞা) তারা পড়েন না। আর যেহেতু এটি নিয়ে একটি মামলা হয়েছিল এবং আমাদের আইন যা বলে তা হলো, হাইকোর্ট বা আপিল বিভাগের যদি কোনো রায় থাকে, সেই রায় আইন হিসেবে গ্রহণ করা হবে। যেহেতু বিচারপতি সাহাবুদ্দীন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেওয়ার সময় মামলা হয়, তখন এই মামলাটি খারিজ হয়ে গিয়েছিল, আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতির পদটি লাভজনক পদ নয়। এটি সাংবিধানিক পদ। অতএব এটি তার জন্য প্রযোজ্য হবে না।
আজ (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। তাকে বাছাইয়ের দিন (১৩ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচিত ঘোষণা করে গেজেট করা হলো। আইন অনুযায়ী তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হলো না কি না বা বিষয়টি আইনসিদ্ধ হলো কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি অবশ্যই আইনসিদ্ধ। আইনে স্পষ্ট লেখা আছে যে, যদি একাধিক প্রার্থী না থাকে এবং মনোনয়নপত্র বাছাই করার পরে যদি দেখা যায় যে, মনোনয়নপত্র সঠিক ও বৈধ, তাহলে ওই সময় তাকে নির্বাচিত হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আর প্রত্যাহার করার জন্য অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে মো. আলমগীর বলেন, আমরা কখনো বলিনি ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে নির্বাচন হবে অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে। আমরা বলেছি ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন হবে। কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী ডিসেম্বরের শেষ শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচনের জন্য এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। কখন ভোট হবে, কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে তা চূড়ান্ত হবে।