ওয়ালটনের সহায়তা পেলো সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত কিস্তি ক্রেতার পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত গ্রাহকের পরিবারকে ১ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছে দেশের মাল্টি ন্যাশনাল ব্র্যান্ড ওয়ালটন। সম্প্রতি খিলগাঁও ওয়ালটন প্লাজা থেকে কিস্তি সুবিধায় একটি করে স্মার্ট এলইডি টিভি এবং ব্লেন্ডার কিনে কয়েকটি কিস্তি পরিশোধের পর মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন বাসাবো এলাকার বাসিন্দা মো. ছোরাব হোসেন। এর প্রেক্ষিতে ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষা নীতির’ আওতায় তার কিস্তি মওকুফ করে পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করলো ওয়ালটন প্লাজা কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ক্রেতাদের জন্য ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষা নীতি’ চালু করেছে ওয়ালটন প্লাজা। এর আওতায় দেশের যেকোনো ওয়ালটন প্লাজা থেকে কিস্তিতে পণ্য ক্রয়কারীদের কিস্তি সুরক্ষা কার্ড দেওয়া হচ্ছে। কিস্তি চলমান থাকা অবস্থায় ক্রেতার মৃত্যু হলে পণ্যমূল্যের ভিত্তিতে ৫০ হাজার থেকে ৩ লাখ এবং তার পরিবারের কোনো সদস্য মৃত্যুবরণ করলে ২৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত সহায়তা দিচ্ছে ওয়ালটন প্লাজা। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পণ্যের অনাদায়ী কিস্তির টাকা সমন্বয়ের পর অবশিষ্ট টাকা ক্রেতা বা তার পরিবারকে দেওয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৫ মার্চ, ২০২৩) পূর্ব নন্দীপাড়ার ব্যাংক কলোনি এলাকার ওয়ালটন প্লাজায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছোরাবের স্ত্রী মোরশেদা বেগমের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন ওয়ালটনের কর্মকর্তারা।

সে সময় উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন প্লাজার ঢাকা বিভাগের চিফ ডিভিশনাল অফিসার মো. আরিফুল ইসলাম, ডিভিশনাল ক্রেডিট ম্যানেজার মো. আল আমিন সরকার, রিজিওনাল সেলস ম্যানেজার আবু নাসের প্রধান, রিজিওনাল ক্রেডিট ম্যানেজার মিজানুর রহমান, মোরশেদা বেগমের মা রাবেয়া খাতুন, নন্দীপাড়া ওয়ালটন প্লাজা ম্যানেজার আক্তারুজ্জামানসহ রামপুরা এরিয়ার বিভিন্ন প্লাজার ম্যানেজাররা।

অনুষ্ঠানে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। মৃত ক্রেতার আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

জানা গেছে, মৃত ক্রেতার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের শিমরাইলে। পরিবারসহ তিনি ঢাকায় বসবাস ও ঠিকাদারি ব্যবসা করতেন। গত বছরের ২ ডিসেম্বর ওয়ালটন প্লাজা থেকে কিস্তি সুবিধায় একটি স্মার্ট এলইডি টেলিভিশন এবং ব্লেন্ডার কেনেন তিনি। তার কিস্তি ক্রেতা সুরক্ষা কার্ড নম্বর ৬৩৭০৩৩২২৯৪৪৪১৩৩৭। চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি মারা যান তিনি। ১ ছেলে ও ১ মেয়েসহ ৫ সদস্যের পরিবারে ছোরাব হোসেন ছিলেন একমাত্র উপার্জনকারী। তার মৃত্যুতে অসহায় হয়ে পড়ে পরিবার।

এ অবস্থায় ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষা নীতি’র আওতায় মৃত গ্রাহকের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে ওয়ালটন প্লাজা কর্তৃপক্ষ। মৃত কিস্তি ক্রেতা ছোরাবের পরিবারকে দেওয়া হয়েছে ১ লাখ টাকা। এর থেকে কিস্তির অবশিষ্ট ২৭ হাজার ৪২১ টাকা পরিশোধের পর তারা পেয়েছেন নগদ ৭২ হাজার ৫৭৯ টাকা।

মৃত বাবার জন্য পাওয়া কিস্তি ক্রেতা সহায়তার অর্থ গ্রহণ করতে মায়ের সঙ্গে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাদারটেক আব্দুল আজিজ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার।

তিনি বলেন, এর আগেও ওয়ালটনের টিভি এবং মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছি আমরা। ওয়ালটনের কিস্তি ক্রেতা সুবিধার বিষয়টি আগে জানা ছিলো না। বাসায় ব্যবহার করার জন্য একটি টিভি এবং ব্লেন্ডার কেনা হয়েছিলো। মাত্র ২টি কিস্তি পরিশোধ করার পর আব্বু মারা গেলেন। ক্রেতা মারা যাওয়ায় কিস্তি মওকুফ করে পরিবারের পাশে দাঁড়ানো একটি দারুণ পদক্ষেপ। ওয়ালটন ছাড়া আর কোনো কোম্পানির দ্বারা এমনটা সম্ভব নয়। আমরা আজীবনের জন্য ওয়ালটনের ভক্ত হয়ে গেলাম। ওয়ালটন কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।
কিস্তির টাকা মওকুফ করা হয়েছে জানতে পেরে আনন্দে আপ্লুত গৃহিণী মোরশেদা বেগম। সন্তানদের নিয়ে আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ওয়ালটন এই বিপদের সময় পাশে দাঁড়িয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। সহায়তার টাকা ছেলে-মেয়ের পড়াশোনার কাজে ব্যয় করবো। এই টাকা না পেলে সন্তানদের পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হতো না।

প্লাজা ম্যানেজার আক্তারুজ্জামান বলেন, নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কিস্তির টাকা পরিশোধের জন্য ছোরাবের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তার নম্বরে ফোন করলে পরিবারের পক্ষ থেকে অকাল মৃত্যুর বিষয়টি জানানো হয়। সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতার বাড়িতে যাই। তাদের সমবেদনা জানাই। সে সময় ওয়ালটন থেকে পাওয়া সহায়তার বিষয়টি জানালে তারা অত্যন্ত আনন্দিত হন। এমন একটি সাধারণ পরিবার এই সহায়তা পাওয়ায় আমরাও আনন্দিত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহজের নিবন্ধন শেষ হচ্ছে আজ
পরবর্তী নিবন্ধআরও ৫০ মডেল মসজিদ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী