রমজানের শুরুতে অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : পবিত্র রমজান মাস গতকাল শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে। প্রতিবারের মতো এবারো রমজানের আগেই অতি প্রয়োজনীয় অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে চাল, ডাল, আটা, পিয়াজ, ময়দা, মসলা, ডিম, মুরগি, মাছ ও মাংসের দাম বেড়েছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্ব পরিস্থিতির প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ীরা ভোক্তার পকেট কাটছে। সংশ্লিষ্টরা আরও বলেন, নানা অজুহাতে রমজানে চাহিদার শীর্ষে থাকা খাদ্যদ্রব্যের দাম কয়েক দফায় বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এদিকে বাড়তি দামের বোঝা বইতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় নিম্নআয়ের ও মধ্যবিত্ত মানুষদের।
এদিকে সম্প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি বলেছেন, দেশে চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি পণ্য মজুত রয়েছে। সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে, রমজান মাসে কোনো পণ্যের ঘাটতি হবে না।
সপ্তাহের ব্যবধানে পিয়াজের ঝাঁজ বেড়েছে। কেজিতে পিয়াজের দাম বেড়েছে ৫-১০ টাকা পর্যন্ত।
গত সপ্তাহে দেশি পিয়াজ ৩০-৩৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে সেটা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪২ টাকায়।
বাজারে চাল, ডাল, চিনি ও সয়াবিন তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম উচ্চমূল্যে এসে থেমে আছে। বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি মোটা চাল খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়, যা গত বছর এ সময়ে ছিল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকায়। মাঝারি মানের চালের দাম পড়ছে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬২ টাকা। আর সরু চাল মিনিকেট ও নাজিরশাইল কিনতে হচ্ছে ৭০ থেকে ৮৫ টাকার মধ্যে। এক কেজি প্যাকেটের পোলাওয়ের চাল ১৭০ টাকায় ঠেকেছে, যা ২০ দিন বা ১ মাস আগেও ছিল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রমজানে বেশি কেনা হয় এমন সব পণ্যের দাম বেড়েছে। ছোলার দাম কেজিপ্রতি বিক্রি হয় ৯০ টাকায়, যা কয়েকদিন আগেও ছিল ৮০ থেকে ৮২ টাকা। খোলা চিনি প্রতি কেজি ১১৫ থেকে ১২০ টাকা, ১০ ও ১৫ টাকা বেড়ে বুটের ডাল ও মসুর ডালের কেজি দাঁড়ায় ১৪০ টাকায়। খেসারি ডাল ৮০-৯০ টাকা, অ্যাংকরের বেসন ৭৫-৮৫ টাকা এবং বুটের বেসন বিক্রি হচ্ছে ১০০-১১০ টাকায়। পাঁচ লিটার তেল কিনতে ভোক্তাকে গুনতে হচ্ছে ৯০০ টাকা। বোতলজাত সয়াবিনের দাম প্রতি কেজি ১৯০ টাকার মধ্যে। এদিকে বাজারে অন্যান্য পণ্যের মতো সবধরনের মাছের দাম বাড়তি। বাজারে পাঙাশ মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০- ২২০ টাকায়, তেলাপিয়া আকৃতি ভেদে প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, চাষের কই প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আকার ভেদে প্রতি কেজি রুই বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৫০০ টাকায়। দেশি জলাশয়ের মাছের দাম ৮০০-১০০০ টাকা চাওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ইলিশ মাছ এক হাজার ৩৫০ থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর মালিবাগে সাইফুল বলেন, বাজারে গরিবের মাছ হিসেবে যে পাঙাশ, তেলাপিয়া পরিচিত সেই মাছেরও অতিরিক্ত দামে ছোঁয়াও যাচ্ছে না।
চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বেগুন। একইসঙ্গে অতিরিক্ত দাম হাঁকানো হচ্ছে শসা ও লেবুতেও। বেগুন প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। আলুর দাম কেজিপ্রতি ২৫ টাকা, পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৪০ টাকা।
দুইদিন আগে ডিমের ডজন ছিল ১৩০ টাকা সেই ডিমের দাম ডজনে ২০ টাকা বেড়ে বিক্র হচ্ছে ১৫০ টাকা।

তবে অতিরিক্ত দাম হাঁকানো হচ্ছে শসা ও লেবুতে। দেশি ও হাইব্রিড শসা যথাক্রমে ৮০ ও ৬০ টাকাতে বিক্রি হলেও তার দাম চাওয়া হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। লেবুর দাম প্রতি হালি ৪০-৫০ টাকা হলেও দাম হাঁকানো হচ্ছে ৬০ টাকা।

কথা হয় ক্রেতা হাবিবেব সঙ্গে। তিনি বলেন, রমজানের প্রথম দিনেই সবজির দাম বেড়ে গেছে। আরেক ক্রেতা আনাস বলেন, রমজানের প্রথম দিনেই বেগুনের দাম বেড়েছে। শসার দামও অতিরিক্ত চাওয়া হচ্ছে। এখন ইফতারিতে তো এসব লাগবেই তাই বাধ্য হয়ে কিনতে হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘সুলভ মূল্যে’ মাংস-দুধ-ডিম কিনতে উপচেপড়া ভিড়
পরবর্তী নিবন্ধ৩৬তম বসন্তে সাকিব আল হাসান