নিউজ ডেস্ক : সবার সহযোগিতা ছাড়া সম্মিলিতভাবে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ মার্কেটটা আসলে আপনাদেরই সৃষ্টি করা মার্কেট। ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের প্রেক্ষাপটে আমরা হয়তো আজ এখানে এসেছি, কিন্তু এখানে আপনারাই প্রধান চালিকাশক্তি। আমরা পুঁজিবাজারের পরিবর্তন চাই।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও-এর নেতৃত্বে ডিবিএর পরিচালনা পর্ষদ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পর্ষদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এসব কথা বলেন ডিএসইর নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ডিবিএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাজেদুল ইসলাম, ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইফুদ্দিনসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য এবং ডিএসইর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন নব-নিযুক্ত পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, আফজাল হোসেন এবং রুবাবা দৌলা, শেয়ারহোল্ডার পরিচালক শাকিল রিজভী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এম. সাইফুর রহমান মজুমদারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ডিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, আমরা আপনাদের সঙ্গে নিয়েই উন্নয়ন পরিকল্পনা করব এবং এ প্রতিষ্ঠান, এ মার্কেট এবং দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটাব। এটাই হলো আমাদের লক্ষ্য। আমাদের নিজস্ব কোনো এজেন্ডা নেই। আমরা এখানে আপনাদের সঙ্গে সমন্বয় করে এ পুঁজিবাজারকে সামনের দিকে নিয়ে যাব। আমি পূর্বেও ডিএসইর আইসিটি কমিটিতে ছিলাম। ডিএসইর আইসিটি হতে হবে অত্যাধুনিক। বাইরের দেশগুলোর মতো আমাদেরও সবকিছু অটোমেটেড হতে হবে। আমাদের আইটি হতে হবে নম্বর ওয়ান। আমাদের আইসিটি শুধু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নয়, সারা বিশ্বের প্রেক্ষাপটে নম্বর ওয়ান হতে হবে। এজন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে এবং পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের অংশগ্রহণে একটি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। আমাদের দুইজন সদস্য এখনো বোর্ডে যুক্ত হয়নি। আমরা দ্রুত তাদের নিয়ে আসার চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, আপনারা একটি গতিশীল মার্কেট চান। তেমনি আমরা একটি শক্তিশালী বোর্ড চাই। কারণ শক্তিশালী বোর্ড একটি ভালো পরিবেশ তৈরি করতে পারে। আমরা প্রত্যেকেই সবসময় আপনাদের পাশে চাই। আপনাদের মার্কেট আপনাদেরই ভালো করতে হবে। আমরা আপনাদের কথা শুনব। আমরা একে অপরের সহযোগী হিসেবে কাজ করব। ডিএসইর উন্নয়নে আপনারা পরিকল্পনা করুন। পুঁজিবাজারকে ব্র্যান্ডিং করতে হবে। সাধারণ মানুষের কাছে পুঁজিবাজার সম্পর্কে যে নেতিবাচক ধারণা রয়েছে, তা পরিবর্তন করতে হবে। আপনারা কখনো আমাদের সঙ্গে কথা বলতে সংকোচবোধ করবেন না। আমরা সব সেক্টর নিয়ে কাজ করব। ভালো ইনভেস্টমেন্ট আনতে হলে ভালো ইন্সট্রুমেন্ট আনতে হবে। আপনারা আমাদের পাশে থাকবেন। আজ আমাদের এ বৈঠক মিলনমেলায় পরিণত হলো। আমাদের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। আমাদের সবাইকে সততার সঙ্গে সুন্দরভাবে এ পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। যা দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে। আজকের শুরুটা এমনভাবে হোক যেন একে অপরের মাঝে বন্ধন তৈরি হয়। আমরা নতুন বোর্ড, বুঝার চেষ্টা করছি। আমরা আপনাদের কাছ থেকে অভিজ্ঞতা নেব। এ বিষয়ে আপনারা আমাদের সহযোগিতা করবেন।
ডিবিএর প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, পুঁজিবাজারের প্রাইমারি রেগুলেটরের এ মর্যাদাপূর্ণ পদে আপনাদের নিয়োগ নিঃসন্দেহে আপনাদের সম্ভাব্যতা ও দক্ষতা নিয়ে সরকারের যে আস্থা রয়েছে তারই বহিঃপ্রকাশ। আমরা নিশ্চিত যে, আপনার সফল নেতৃত্ব, প্রজ্ঞা এবং দিক নির্দেশনায় পুঁজিবাজার আগামীতে আরও বেশি উচ্চতা এবং সাফল্য অর্জন করবে। আপনার একাডেমিক রেকর্ড, দক্ষতা এবং আইসিটি জগতের বহুমুখী পেশাদারিত্ব অভিজ্ঞতায় পুঁজিবাজারের গতিশীলতা আনবে।
ডিবিএর পরিচালক বলেন, পুঁজিবাজারের ব্যবসাটাই মূলত: ব্রোকারদের মূল ব্যবসা। ব্রোকাররা সবসময় নিজেদের স্বার্থেই পুঁজিবাজারকে ভালো অবস্থানে দেখতে চায়। স্টক ট্রেডিং বেইজড ইনকামের পাশাপাশি ডেটা সেলসহ অন্যান্য খাত থেকে আয় বৃদ্ধি করতে হবে। ২০১৩ সালের ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের পূর্বে এ ব্রোকাররাই পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রণ করত। আপনাদের প্রতি আমাদের অনেক প্রত্যাশা। আশা করি, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা একটি উন্নত পুঁজিবাজার গঠন করতে পারব। বর্তমানে লেনদেনের ভলিউম প্রত্যাশা অনুযায়ী হচ্ছে না। এ ভলিউম বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আমাদের ব্যবসায়িক পরিবেশে কী ধরনের মডেল কাজ করবে তা খুঁজে বের করতে হবে। ডিএসইকে এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। ডিএসইকে একটি শক্তিশালী নেগোসিয়েটর হিসেবে দেখতে চাই। স্টক এক্সচেঞ্জের টেকনোলজিতে আরও উন্নতি চাই। আশা করি, আপনাদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে এবং আপনাদের সহযোগিতায় আগামী দিনে একটি শক্তিশালী স্টক এক্সচেঞ্জ তৈরি করতে পারব।