নিউজ ডেস্ক : ৬৪০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রির যৌক্তিকতা এখনও রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বিকেল ৪টায় রাজধানীর খামারবাড়ীর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর চত্বরে পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা জানান।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, যুক্তিসঙ্গত লাভের কারণে যারা অতিরিক্ত মুনাফা লাভের জন্য মানুষকে কষ্ট দেয়, তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ এবং সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে। আশা করি, মানুষের সহনশীল মূল্যে আমরা পণ্য বিক্রি করতে পারবো।
সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কার্যক্রমে কোনো ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে কিনা, ভর্তুকি না দিলে ৬৪০ টাকা করে গরুর মাংস কিভাবে বিক্রি করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা অতিরিক্ত লাভ করতে চায়, তারা অতিরিক্ত মূল্য নেয়। সরকার কোনো লাভের জন্য না, মানুষের উপকারের জন্য আমরা এ কার্যক্রম চালাচ্ছি। এক্ষেত্রে আমরা ভর্তুকি না দিয়েও করতে পারছি, অর্থাৎ যারা ব্যবসায়ী, তারা কিন্তু আমরা যে দামে বিক্রি করছি, এই দামে বিক্রি করার মতো যৌক্তিকতা আছে। আমরা কোনো ভর্তুকি দিচ্ছি না, আমরা কোনো লাভও করছি না। যৌক্তিক মূল্যে বিক্রি করলে, এই মূল্যে যে বিক্রি করা যায়, আমরা তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করছি।
গতবারের তুলনায় এবার গরুর মাংসের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতবছর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ছিল না, গতবার বিদেশে থেকে পশু খাদ্য আমদানিতে প্রতিকূল পরিবেশ ছিল না, ফলে পশু খাদ্যের দাম বেড়েছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক একটা মন্দায় রয়েছে। সেক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে রিপোর্ট আছে, আমরা মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বাংলাদেশের মানুষ যে খাবারে অভ্যস্ত, তার জন্য যে পরিমাণ গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়ার যোগান দেওয়া প্রয়োজন, তার থেকে বেশি উৎপাদন হচ্ছে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠান থেকে জানানো হয়, গরু, খাসি ও মুরগির মাংস এবং দুধ, ডিমের সরবরাহ বৃদ্ধি ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার মাধ্যমে রমজান মাসে জনসাধারণ যেন সহজেই প্রাণিজ আমিষের চাহিদা মেটাতে পারেন সেলক্ষ্যে ব্যবসায়ী, উৎপাদনকারী ও সাপ্লাই চেইন-সংশ্লিষ্ট সবাইকে সঙ্গে নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় মাসব্যাপী সুলভ মূল্যে ভ্রাম্যমাণ দুধ, ডিম ও মাংস বিপণন ব্যবস্থা চালু করছে।
এ কর্মসূচির আওতায় তরল দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা, গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৪০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৯৪০ টাকা, ড্রেসিং ব্রয়লার মাংস প্রতি কেজি ৩৪০ টাকা এবং ডিম প্রতিটি ১০ টাকা দরে বিক্রয় করা হবে।
প্রথম রমজান থেকে শুরু হয়ে ২৮ রমজান পর্যন্ত ২০টি স্থানে এ ভ্রাম্যমাণ বিপণন ব্যবস্থা রাজধানীতে পরিচালিত হবে। সেএলাকাগুলো- নতুনবাজার (বাড্ডা), কড়াইল বস্তি (বনানী), খামারবাড়ী (ফার্মগেট), আজিমপুর মাতৃসদন (আজিমপুর), গাবতলী, দিয়াবাড়ী (উত্তরা), জাপান গার্ডেন সিটি (মোহাম্মদপুর), ৬০ ফিট রোড (মিরপুর), খিলগাঁও (রেল ক্রসিংয়ের দক্ষিণে), সচিবালয়ের পাশে (আব্দুল গণি রোড), সেগুন বাগিচা (কাঁচা বাজার), আরামবাগ (মতিঝিল), রামপুরা, কালসী (মিরপুর), যাত্রাবাড়ী (মানিকনগর গলির মুখে), বসিলা (মোহাম্মদপুর), হাজারীবাগ (সেকশন), লুকাস (নাখালপাড়া), নয়াবাজার (পুরান ঢাকা) এবং কামরাঙ্গীর চর।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. এমদাদুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ।