নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে বর্তমানে যে পরিমাণ নার্স রয়েছে, তার চেয়ে আরও দ্বিগুণের বেশি প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, আমরা গত দশ বছরে ৩৪ হাজার নিয়োগ দিয়েছি। পর্যায়ক্রমে চাহিদামতো আরও নার্স নিয়োগ দেওয়া হবে।
শুক্রবার (৩১ মার্চ) সকালে রাজধানীর ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজে ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি, ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি ও বিএসসি ইন নার্সিং কোর্সের ২৭তম কমপ্রিহেনসিভ (লাইসেন্সিং) পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, একজন রোগীকে ডাক্তার শুধু দেখে যায়, আর নার্সরা সার্বক্ষণিক সেবা দেয়। স্বাস্থ্য সেবার জন্য নার্সদের ভূমিকা অনেক। আমরা বিভিন্ন বিষয়ের ওপর স্পেশালাইজড নার্স তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছি। এতে করে নার্সিং সেবা অনেকদূর এগিয়ে যাবে। তবে নার্সদেরকে আরও আন্তরিকতার সাথে রোগীদের সেবা দিতে হবে।
বিদেশে বাংলাদেশি নার্সের চাহিদা অনেক জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, আমরাও চাই আমাদের নার্সরা বিভিন্ন দেশে সেবা দিয়ে বাংলাদেশের সম্মান বয়ে আনুক। এজন্য তাদেরকে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণের আওতায় এনে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, দেশে বর্তমানে ৮৫ হাজার নার্স কাজ করছে। এর মধ্যে ৪৫ হাজার সরকারি, আর বাকিরা বেসরকারি। দেশে নার্সদের ৩৫০টি ইনস্টিটিউটে ৩৪ হাজার সিট আছে।
চিকিৎসকদের ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সাধারণ সরকারি হাসপাতালগুলোতে দুইটার পরে কোনো ডাক্তার থাকে না। কিন্তু দুইটার পরেই হাসপাতালে রোগী বেশি থাকে। সেকারণে আমরা হাসপাতালগুলোতে প্রাতিষ্ঠানিক চেম্বার কার্যক্রম শুরু করেছি। একজন চিকিৎসক বাইরে যে সময় দিত, সেটাই এখানে দিবে। এতে করে হাসপাতালে যেসব রোগী ভর্তি থাকে, তারাও সেবা নিতে পারবে।
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন এবং বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের অধিভুক্ত দেশের সরকারি-বেসরকারি নার্সিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে উত্তীর্ণ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কোর্স সম্পন্নকারিদের ২৭তম কম্প্রিহেন্সিভ (লাইসেন্সিং) পরীক্ষা ৪টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর এতে অংশগ্রহণ করেছে ৩টি কোর্সের মোট ১১ হাজার ৯০৪ জন পরীক্ষার্থী।
কেন্দ্র ও কোর্স অনুযায়ী পরীক্ষার্থী সংখ্যা : কোর্স অনুযায়ী ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারির পরীক্ষার্থী ৮ হাজার ১৬৫ জন, ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সে পরীক্ষার্থী ৪০ জন, ডিপ্লোমা ইন পেশেন্ট কেয়ার টেকনোলজি কোর্সে ২ হাজার ৬৫২ জন এবং বিএসসি ইন নার্সিং কোর্সে পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে ২ হাজার ৪৮৩ জন।
রাজধানীর ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পরীক্ষা দিয়েছে ৪ হাজার ৬১৯ জন, হাবিবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ২ হাজার ১৫০ জন, উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২ হাজার ৬৫২ জন এবং সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছে ২ হাজার ৪৮৩ জন শিক্ষার্থী।
পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাকসুরা নূর (এনডিসি), পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু (এনডিসি), স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক টিটো মিয়া প্রমুখ।