২ মার্কিন ব্যাংকের ধস, তেলের পর বাড়ল স্বর্ণের দামও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মাত্র তিন দিনের মধ্যে বৃহৎ দুই মার্কিন ব্যাংকের পতনের জেরে ডলারের মান কিছুটা কমেছে; আর এই অবনমনের জেরেই দাম বেড়েছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের।

আন্তর্জাতিক স্বর্ণের বাজার পর্যবেক্ষণকারী সংবাদমাধ্যম কিটকো’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স (২৮ দশমিক ৩৫ গ্রাম) স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৯০০ ডলারে, অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় ২ লাখ ৫৮৩ টাকা।

ভারতীয় উপমহাদেশের (পাকিস্তান-ভারত-বাংলাদেশ) বাজারে ভরি বা তোলা (১১ দশমিক ৬৬ গ্রাম) হিসেবে স্বর্ণের কেনাবেচা চললেও আন্তর্জাতিক বাজারের স্বীকৃত পরিমাপ পদ্ধতি হলো আউন্স। হিসেব অনুযায়ী, এক আউন্সের একটি স্বর্ণখণ্ডের ওজন আড়াই ভরির সমান।

কিটকো’র তথ্য অনুযায়ী, রোববার আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল ১ হাজার ৮৮১ দশমিক ৪০; অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ লাখ ৯৮ হাজার ৬১৯ টাকা ৩৯ পয়সা। শতকরা হিসেবে একদিনের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম বেড়েছে দশমিক ৭৬ শতাংশ।

গুজবের জেরে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অধিকাংশ গ্রাহক তাদের সঞ্চয়ের অর্থ তুলে নেওয়ায় শনিবার ধসে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক। তার মাত্র তিন দিনের মধ্যে একই পরিণতি ঘটে অপর মার্কিন ব্যাংক সিগনেচারের ক্ষেত্রেও। তারল্য সংকট চলতে থাকায় রোববার নিউইয়র্কভিত্তিক সিগনেচার ব্যাংক বন্ধ ঘোষণা করে নিয়ন্ত্রণ নেয় দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স কর্পোরেশন (এফডিআইসি)। এসভিপি ও সিগনেচার— উভয়ই যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ ব্যাংকের পর্যায়ভুক্ত।

ডলারের মান অনুসরণকারী মার্কিন সূচক ইউএস ডলার ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী, পর পর দু’টি ব্যাংকের পতনের পর বিভিন্ন শক্তিশালী মুদ্রা, যেমন—ব্রিটেনের পাউন্ড, কানাডিয়ান ডলার, জাপানের ইয়েন, সুইডেনের ক্রোনা ও সুইজারল্যান্ডের ফ্রাঙ্কের তুলনায় সোমবার ডলারের অবনমন ঘটেছে দশমিক ৫৮ শতাংশ।

এই ব্যাপারটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ গত বছর জুন মাসের মাঝামাঝি অন্যান্য শক্তিশালী মুদ্রার তুলনায় লাগামহীন ভাবে বাড়ছিল ডলারের দাম।

এদিকে, ডলারের অবনমনের পর সোমবারই বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। বাজার পর্যালোচনা করে জানা গেছে, এই দিন অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দুই ব্র্যান্ড— ব্রেন্ট ক্রুড এবং ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট— উভয়েরই দাম ব্যারেলপ্রতি বেড়েছে শতকরা দশমিক ৩০ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের (ট্রেজারি) বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন এবং দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমের চেয়ারম্যান জেরোমি পওয়েল অবশ্য সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে রক্ষা এবং ব্যাংকখাতে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থমন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৫০ বছরে বাংলাদেশকে ২১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে এডিবি
পরবর্তী নিবন্ধজনতা ব্যাংকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত