নিজস্ব প্রতিবেদক: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে রমজানের প্রথমদিন থেকে রাজধানীতে সুলভমূল্যে দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। চলবে আগামী ২৮ রমজান পর্যন্ত। অন্যান্য দিনের তুলনায় সরকারি ছুটির দিন শনিবার (১ এপ্রিল) বাড়তি সাড়া মিলছে এসব বিক্রয়কেন্দ্রে।
এদিন রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে ক্রেতাদের বেশ ভিড়। অন্য দিনের তুলনায় এ বিক্রয়কেন্দ্রে ক্রেতাসমাগম বেশি।
এ বিক্রয়কেন্দ্রে পণ্য কিনতে আসা জেসমিন বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি ৩২০ টাকা দিয়া আধা কেজি গরুর মাংস নিলাম। মোটামুটি ভালোই মনে হইলো। আজ এখান থেকে প্রথম নিলাম। বাজারে কিনতে গেলেও কিছুটা ছাড় পাই, তবে এখানে তার চেয়ে দাম আরও কম।’
স্থানীয় বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে মাংসের যে দাম তাতে সেখান থেকে কেনা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাজার থেকে এখানে দাম প্রায় দেড়শ টাকা কম। সেজন্য এখান থেকে পণ্য কিনতে এসেছি। আমি মাংসের সঙ্গে দুধ ও ডিম নেবো।’
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাণীক্রয়, উন্নয়ন ও বিপণন দপ্তরের সহকারী পরিচালক কে এম সাদ্দাম হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ছুটির দিন হওয়ায় আজ বিক্রি খুব ভালো। এখানে অনেক অফিস থাকায় অন্য দিনও বিক্রি ভালো হয়, তবে আজ দ্রুত বিক্রি হয়ে যাচ্ছে সব। প্রতিদিন বিকেল ৪টা পর্যন্ত পণ্য বিক্রি করে শেষ করতে পারি। তবে আজ দুপুর ২টার মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে।’
এদিকে স্থানীয় প্রশাসন ও প্রভাবশালীদের জন্য আজ নির্ধারিত স্থানে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্র বসতে পারেনি। ফলে সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের পরিবর্তে শিল্পকলার বিপরীত পাশে বসাতে হয়েছে বিক্রয়কেন্দ্র।
এ বিষয়ে সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘বাজারের ওখানে বসতে বাধা পেতে হয়েছে। সেখানে লোকাল বাজারের লোকজন এবং পুলিশের এসআই মামুনের বাধায় আমরা বসতে পারিনি। এরপর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগোরা সুপার শপের সামনে বসানো হলে সেখানেও বাধার মুখে পড়তে হয়। সেজন্য এখানে বসতে হয়েছে।’
রাজধানীর নতুনবাজার (বাড্ডা), কড়াইল বস্তি, খামারবাড়ি, আজিমপুর মাতৃসদন, গাবতলী, দিয়াবাড়ী (উত্তরা), জাপান গার্ডেন সিটি, ৬০ ফুট রোড, খিলগাঁও (রেলক্রসিংয়ের দক্ষিণে), সচিবালয়ের পাশে (আবদুল গণি রোড), সেগুনবাগিচা, আরামবাগ, রামপুরা, কালশী (মিরপুর), যাত্রাবাড়ী (মানিকনগর গলির মুখে), বছিলা, হাজারীবাগ (সেকশন), লুকাস মোড় (নাখালপাড়া), নয়াবাজার (পুরান ঢাকা) এবং কামরাঙ্গীর চর এলাকায় সুলভমূল্যে এসব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।
ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৪০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৯৪০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ৩০০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা এবং ডিম ডজনপ্রতি ১১০ টাকা মূল্যে বিক্রয় করা হচ্ছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুধ, ডিম ও মাংসের সরবরাহ এবং মূল্যস্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে রমজান মাসে জনসাধারণ যেন প্রাণিজ আমিষ ও পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারে সে লক্ষ্যে ব্যবসায়ী, উৎপাদনকারী ও সাপ্লাই চেইন সংশ্লিষ্ট সবাইকে সঙ্গে নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।