বীমা খাতের পতনে শেয়ারবাজারে সূচকের পিছুটান

মাসুদ মিয়া: দেশের শেয়ারবাজার গতকাল সপ্তাহের দ্বিতীয় সোমবার সামান্য দর পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে পাশাপাশি সূচক ও লেনদেন।
এদিকে গত কয়েকদিন বীমা খাতের কল্যানে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেলেও গতকাল বীমা কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম ঢালাওভাবে কমেছে। এতে সার্বীক শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। গতকাল প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্য সূচক কমেছে। সেই সঙ্গে দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি লেনদেনও কমেছে।
দিনের লেনদেন শেষে সবকটি সূচকের পতন হলেও একই দিন লেনদেনের শুরুর চিত্র ছিলো ভিন্ন। গত কয়েক কার্যদিবসের মতো লেনদেনের শুরুতেই বীমাসহ অন্যান্য খাতের বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়ে যায়। ফলে ডিএসইতে লেনদেন শুরু হতেই প্রধান সূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
গতকাল শুরুতে দেখা দেয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা প্রথম দুই ঘণ্টা অব্যাহত থাকে। কিন্তু দুপুর ১২টার পর থেকে এক শ্রেণীর বীনিয়োগকারীরা বীমা কোম্পানির শেয়ার বীক্রির চাপ বাড়ায়। ফলে একের পর এক বীমা কোম্পানির শেয়ারের দাম কমতে থাকে। যার প্রভাব গিয়ে পড়ে অন্য খাতের ওপরও।
লেনদনের শেষ আধাঘণ্টায় এসে দরপতনের প্রবণতা আরও বড় হয়। ফলে একদিকে দাম কমার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে পতন হয় সবকটি মূল্য সূচকের। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে ৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বীপরীতে ১১১টির দাম কমেছে। আর ১৯৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অপরদিকে বীমা খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৪৫টির শেয়ারের দাম কমেছে। বীপরীতে দাম বেড়েছে ৯টির। এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৭ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩৩২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৬৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৯৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

মূল্য সূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কিছুটা কমেছে। তবে ডিএসইতে হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৭৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ১৭৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ২ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৬ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বসুন্ধরা পেপারের ২৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৬ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের।
লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- ইন্ট্র্যাকো রিফুয়েলিং, বসুন্ধরা পেপার, লাফার্জহোলসিম, সী পার্ল বীচ, ইউনিক হোটেল, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, নাভানা ফার্মা, আমরা নেটওয়ার্ক ও সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স।

দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামী মিঃ ফাঃ, মাইডাস ফাইন্যান্স, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স,প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিঃ ফাঃ, সিএপিএম বিডিবিএল মিঃ ফাঃ, ন্যাশনাল টি, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ ও দেশবন্ধু পলিমার।

দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- ওআইমেক্স ইলেক্ট্রোড, মিডল্যান্ড ব্যাংক, রেনউইক যজ্ঞেশ^র, বিজিআইসি, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক ও প্রগতী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বীক মূল্য সূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ২৪২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৫টির দাম বেড়েছে। বীপরীতে দাম কমেছে ৭৪টির এবং ১০৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকরোনার ৩০ লাখ টিকা দিচ্ছে ফাইজার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধনির্বাচনের আগে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে না