নিউজ ডেস্ক : গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খান নির্বাচনী আচরণ লঙ্ঘন করে দুঃখিত ও অনুতপ্ত। আমরা তার বক্তব্যে সন্তুষ্ট।
রোববার (৭ মে) আজমত উল্লার শুনানি শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রীকে নিয়ে সভা করায় ও মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শোডাউন করায়, আজমত উল্লা খানের প্রার্থিতা কেন বাতিল করা হবে না, সেই ব্যাখ্যা নির্বাচন ভবনে এসে দেওয়ার জন্য গত ৩০ এপ্রিল নির্দেশনা দেয় ইসি।
আজ (৭ মে) বিকেলে সেই ব্যাখ্যার শুনানি শেষে সিইসি বলেন, আমরা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। উনি অত্যন্ত চমৎকারভাবে, অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, আগামীতে এ ধরনের ভুল হবে না। উনি বিশ্বাস করেন যে, কিছু কিছু ভুল অজ্ঞতাবশত হয়েছে, আর কিছুটা উনি বলেছেন যে, দু-একটা সভা হয়েছে। উনারা ডিসি এবং কমিশনারের অনুমতি নিয়ে সিটি করপোরেশনের বাইরে সেগুলো করেছেন। উনি ৫ ধারার যে বিধানটা বলেছেন, উনি তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টা নিয়ে ইয়ে (সচেতন) ছিলেন না।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ওই শোডাউনকেই আমরা বড় করে দেখেছিলাম। এ বিষয়ে উনি বলেছেন যে, সেদিন মনোনয়নপত্র সাবমিট করার ব্যাপার ছিল। বেশ কিছু সংখ্যক কাউন্সিলর, তারা একই সঙ্গে দলবল নিয়ে এসেছেন। এজন্য বড় ধরনের একটা শোডাউনের মতো মনে হয়েছে। আমরা উনার বক্তব্যে প্রাথমিকভাবে অত্যন্ত সন্তুষ্ট। উনি সুন্দরভাবে আমাদের সঙ্গে কো-অপারেট করার এবং নির্বাচন আচরণ বিধি যাতে ভবিষ্যতে প্রতিপালিত হয়, অনুসরণ করা হয়, সেটা সর্বোতভাবে উনি চেষ্টা করবেন। আমরা যেটা শোকজ করেছি। উনি উনার বক্তব্যটা দিয়েছেন।
সন্তুষ্ট হয়েছেন বললেন, তাহলে কী ক্ষমা করে দিলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আমরা এখানে বলেছি, এখনো আমরা (কমিশন) কোনো সিদ্ধান্ত নিই নাই। কিন্তু উনি উনার বক্তব্য সুন্দরভাবে দিয়েছেন। অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা লিখিতভাবে চাইলে সেটাও দিতে চেয়েছেন। আমরা ফারদার কোনো তদন্ত করবো না।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, দুঃখ প্রকাশ করেছেন সার্বিকভাবে, যদি নির্বাচন আচরণ বিধি ভঙ্গ হয়ে থাকে। উনি দুঃখিত এবং অনুতপ্ত। এই জিনিসগুলো সব সময় আপেক্ষিক। একটা জিনিস বিচারেও আমরা দেখি হয়েছে কি হয়নি, এটা অনেক সময় গ্রে এরিয়া থাকে। আমাদের দেশে যে নির্বাচনী সংস্কৃতি, যে কৃষ্টি বহু বছর ধরে গড়ে উঠেছে, সেখানে এই ধরনের নির্বাচনী উচ্ছ্বাস হয়ে থাকে। আমরা নির্বাচন কমিশনও মনে করি, এটা রাতারাতি এক ধাক্কা দিয়ে, সুইস টিপে বন্ধ করা যাবে না। সবার সহযোগিতা লাগবে। আমরাও এটাকে এনফোর্স করার চেষ্টা করব। হয়তো ইনশাল্লাহ এভাবে ধীরে ধীরে শুভ কালচার গড়ে উঠবে।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, মন্ত্রী যে সভাতে ছিলেন, সেটা বাইরে ছিল। তারপরও উনি বলেছেন যে, ভবিষ্যতে বিষয়গুলো মেনে চলবেন।
সরকারি দলের প্রার্থীকেই কেন এতো চিঠি দিতে হচ্ছে? এই প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, অন্য দলের প্রার্থীদের বিষয়টি কিন্তু গণমাধ্যমে উপস্থাপিত হয় না। যেটা মোটাদাগে আমাদের কাছে পরিবেশিত হয়েছে, আমরা যেটা হস্তক্ষেপ করার প্রয়োজন বলে মনে করেছি, সেখানেই আমরা হস্তক্ষেপ করেছি। আমরা পার্টির সাধারণ সম্পাদক, মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে চিঠি দিয়েছি। কাজেই আমাদের দিক থেকে যা যা করার দরকার, সব করছি। আশা করছি, এটা একটা সচেতনতা সৃষ্টি করবে। অন্য সিটিতে এটা একটা ইতিবাচক রেসপন্স হবে।