যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলায় আর বিষবাষ্প নয়: কৃষি সচিব

নিজস্ব প্রতিবেদক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটি থেকে আমদানি করা তুলা ক্ষতিকর পোকামুক্ত করতে আর বিষবাষ্পের ব্যবহার করা হবে না বলে জানিয়েছেন কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার।

রোববার (২১ মে) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন তথ্য জানান। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের (ইউএসটিআর) সঙ্গে বৈঠক করেন কৃষি সচিব।

সচিব বলেন, আমরা যখন তুলা আমদানি করি, তখন সেটিকে ১০ দিন বন্দরে রেখে বিষবাষ্প (ফিউমিগেশন) দিয়ে জীবন্ত ক্ষতিকর পোকা দমন করতে হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি ছিল, সেখান থেকে আমদানি করা তুলার ক্ষেত্রে যাতে এই প্রক্রিয়া অবলম্বন করা না হয়।

‘তুলার এই জীবন্ত পোকা খুবই ভয়ঙ্কর। এই পোকায় আক্রান্ত হলে সেই তুলা দিয়ে আর সুতা হয় না।’

ওয়াহিদা আক্তার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিষবাষ্প দিয়ে আমরা তুলাকে ক্ষতিকর পোকামুক্ত করে আসছি। কিন্তু তাদের দাবি ছিল, এই প্রক্রিয়ার দরকার নেই। এটি যাতে আমরা না করি।

আরও পড়ুন: বছরে তুলা আমদানিতে খরচ ৩৫ হাজার কোটি টাকা

এরপর গত বছর আমাদের একটি টেকনিক্যাল টিম যুক্তরাষ্ট্রে যায়। বিভিন্ন রাজ্য ঘুরে দেখা গেছে, তারা তুলা ওই ক্ষতিকর পোকামুক্ত করছে। আর তারা যে প্রেসারে তুলা আমাদের কাছে পাঠায়, তাতে কোনো ক্ষতিকর পোকার বেঁচে থাকার শঙ্কা নেই বলেও জানান সচিব।

তিনি বলেন, সবকিছু মিলিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দেয়, বিষবাষ্প দিয়ে তুলাকে ক্ষতিকর পোকামুক্ত করার প্রক্রিয়া থেকে তাদের রেহাই দেওয়া যেতে পারে।

‘তখন আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি, তারা যদি এ সংক্রান্ত নীতির পরিবর্তন আনে, তাহলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আপত্তি নেই। তখন তারা জানিয়েছে, যদি কৃষি মন্ত্রণালয় কোয়ারেন্টাইন আইন সংশোধন করে এমন সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে তাদের কোনো আপত্তি নেই। এরপর আমরা কোয়ারেন্টাইন আইন সংশোধন করি। তার গেজেটও প্রকাশ হয়েছে।’

এভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের কাছ থেকে তুলা আমদানিতে এই ছাড় দেওয়া হয়েছে জানিয়ে ওয়াহিদা আক্তার বলেন, তবে তাদের কোয়ারেন্টাইন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটি সনদ লাগবে, যাতে বলা থাকবে এই তুলা সম্পূর্ণ ক্ষতিকর পোকামুক্ত।

সচিব আরও বলেন, বাংলাদেশের তুলার চাহিদার ৯০ শতাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। আমাদের চাহিদা মতো দেশে তুলা উৎপাদন হয় না। কারণ, এটি শীতকালীন ফসল। কিন্তু এ সময়ে আমরা বোরো চাষ করি। বোরোর সঙ্গে আমরা আপস করি না।

কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, প্রতিবছর আশি থেকে ৮৫ লাখ বেল তুলার দরকার পড়ে বাংলাদেশের। সেখানে দেশে উৎপাদন করা হয় দুই লাখ বেল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজরুরি ভিত্তিতে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি চায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশে আরও উন্নত বিনিয়োগের পরিবেশ চায় আমেরিকা