নিউজ ডেস্ক : দুই কার্যদিবস কিছুটা মূল্য সংশোধনের পর দেশের শেয়ারবাজারে আবারও দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে বিমা খাতের কোম্পানিগুলো। এতে সার্বিক শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। মূল্যসূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের গতি।
মঙ্গলবার (২৩ মে) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সেই সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে নয়শ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। পাশাপাশি দাম কমার থেকে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে প্রায় চার গুণ প্রতিষ্ঠান।
এর আগে গত সপ্তাজুড়ে শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বড় ধরনের দাপট দেখায় বিমা খাত। ফলে এক সপ্তাহেই একাধিক বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম ৩০ শতাংশের ওপরে বাড়ে। এমনকি গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে দাম বাড়ার শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সাতটি স্থানই দখল করেছে বিমা খাতের কোম্পানি। আর শুধু ‘এ’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান বিবেচনায় নিলে শীর্ষ দশটি স্থানই বিমা কোম্পানি দখলে ছিল।
তবে চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবস গড়পড়তা প্রায় সব বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম কমে যায়। এতে সার্বিক শেয়ারবাজারেও নেতিবাচক প্রবণতা দেখা যায়। এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
লেনদেনের শুরুতে সূচক বাড়াতে প্রধান ভূমিকা পালন করে বিমা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো। লেনদেনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অধিকাংশ বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। ধীরে ধীরে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে অন্যান্য খাতেও। ফলে লেনদেনের সময় গাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বড় হতে থাকে দাম বাড়ার তালিকা। সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা।
ফলে সবকটি মূল্যসূচকের বড় উত্থান দিয়ে শেষ হয় দিনের লেনদেন । দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৬টির এবং ১৭৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অন্যদিকে বিমা খাতের ৪৬টি কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়েছে এবং ৪টির দাম কমেছে।
দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বিমা খাতের কোম্পানিগুলোর এমন দাপটের দিনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২৪ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৩০৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৭১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৯৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এদিকে মূল্যসূচকের উত্থানের দিনে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৯২০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭০৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ২১২ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪১ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ৪০ কোটি ৯০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৩১ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জেমিনি সি ফুড, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন, ওরিয়ন ইনফিউশন, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, চাটার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং অ্যাডভেন্ট ফার্মা।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৬০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ২১৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৮টির এবং ৮৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ২৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা।