কাস্টমস আইনের পরিবর্তন চায় বিজিএপিএমইএ

নিজস্ব প্রতিবেদক : কাস্টমস আইনের সংশ্লিষ্ট বিধি-বিধানের পরিবর্তন চেয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস্ এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ)। বন্ড সুবিধার আওতায় আমদানিকরা পণ্যের হারমোনাইজড কমডিটি ডেসক্রিপশন অ্যান্ড কোডিং সিস্টেমস এইচএসকোডের বর্ণনায় ভূলজনিত কারণে দণ্ড আরোপ ও আপিল দায়ের সংক্রান্তে এ কাস্টমস আইনের পরিবর্বতন চাওয়া হয়।

সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পাঠানো এক চিঠিতে সংগঠনটির মোস্তফা সেলিম জানান, অনিচ্ছাকৃত বা সামান্য ভুলের কারণে আমদানিকরাককে পুরো চালানের ওপর জরিমানা দিতে হয়। এর ফলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

বন্ডেড প্রতিষ্ঠান বন্ড লাইসেন্স এবং আমদানি প্রাপ্যতায় বর্ণিত কাঁচামাল বিনা শুল্কে আমদানি করে ইউপি গ্রহণপূর্বক তা ব্যবহার করে পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি করে। আমদানিকৃত কাঁচামাল ব্যবহৃত হয়েছে কি না তা কাস্টমস্ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিশ্চিৎ করা হয়। আমদানি করা কাঁচামালের বর্ণনায় ও এইচএসকোডে কোনো ভুল হলেও সেটি প্রকৃত প্রস্তাবে যে পণ্য উৎপাদনের জন্য আমদানি করা হয় সেটির উৎপাদনেই ব্যবহার করা হয়।

চিঠিতে বলা হয়, কাস্টমস্ কর্তৃপক্ষ বন্ডেড প্রতিষ্ঠানের আমদানিকৃত কাঁচামালের ক্ষেত্রেও পণ্যের বর্ণনায় ও এইচএসকোডের গরমিলের কারণে দি কাস্টমস্ এ্যাক্ট ১৯৬৯ এর ধারা ১৫৬ (১) এর ১৪ নম্বর ক্রমিকের ২ নম্বর কলামের (দি কাস্টমস্ অ্যাক্টের ধারা ৩২) অধীনে আমদানিকরা কাঁচামালের মূল্যের সর্বনিম্ন দ্বিগুণ ও সর্বোচ্চ চারগুণ দণ্ড আরোপ করে থাকে। এমনকি কোনো চালানে ৫ প্রকার কাঁচামালের আমদানি করা হলে তার মধ্যে যে কোনো একটির ক্ষেত্রে বর্ণনায় এইচএসকোডের গরমিল হলে সম্পূর্ণ চালানের মূল্যের ওপর জরিমানার পরিমাণ ধার্য্য করা হয়।

এতে বলা হয়, কাস্টমস আইনের বর্ণিত ধারা অনুযায়ী দণ্ডারোপ বিশেষ করে ছোটখাটো বা অনিচ্ছাকৃত ভুলের ক্ষেত্রে উক্ত দণ্ড বাণিজ্য সহায়ক না হতে পারে এরূপ বিবেচনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২০ সালে একটি পত্রের মাধ্যমে ব্যাখ্যা প্রদান করে যে, ভুলটি অবৈধ অভিপ্রায় না অসাবধানতাবশত: সেটি বিচারিক প্রজ্ঞায় বিবেচনা করবেন ন্যায় নির্ণয়কারী কর্মকর্তা। ফলে দেখা যাচ্ছে উক্তরূপ দণ্ড আরোপ সম্পূর্ণভাবে ন্যায় নির্ণয়কারীর ওপর বর্তিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, পূর্বে দত্ত আরোপের সুনির্দিষ্টতা ছিল এবং ন্যায় নির্ণায়কের বিবেচনার ওপর সিদ্ধান্ত ছিল না। এ কারণে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের হয়রানি হওয়ার সুযোগ কম ছিল। দি কাস্টমস্ অ্যাক্টের আওতায় আরোপিত কোনো দণ্ড/শুদ্ধ সম্পর্কিত কোনো আদেশ বা রায়ের বিরুদ্ধে ১৯৩ বা ১৯৬ (এ) ধারা মোতাবেক আরোপিত জরিমানা বা দণ্ডের একটি নির্দিষ্ট অংশ জমা দান করে আপিল দায়ের করতে হয়। জরিমানা বা দণ্ডেরর পরিমাণ আপিল আদালত নির্ধারণ করে থাকে। এ ক্ষেত্রেও বিষয়টি আপিল আদালতের বিচারকের বিবেচনার ওপর নির্ভরশীল। দণ্ড বা জরিমানার অর্থ জমাদানপূর্বক আপিল দায়ের ন্যায়নীতির পরিপন্থি যা বাংলাদেশ সংবিধানও সমর্থন করে না।

আপিল দায়ের হওয়ার অর্থই হলো বিষয়টি বিচারধীন। চূড়ান্ত বিচারে দণ্ড বা জরিমানা বহাল না হওয়া পর্যন্ত দোষী হিসেবে গণ্য করে দণ্ড বা জরিমানার অর্থ জমা দান করে আপিল দায়ের করার বিধান বাতিল করা ন্যায় বিচারের জন্য একান্তভাবে আবশ্যক।

এ অবস্থায় ন্যায় বিচারের স্বার্থে দি কাস্টমস্ অ্যাক্ট ১৯৬৯ এর ১৫৬ (১) উপানুচ্ছেদ এবং ১৯৬ (এ) উপানুচ্ছেদে ওপরের বর্ণনার আলোকে সংশোধন বা পরিবর্তন আনয়নের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাকিস্তানের টেক্সটাইল রপ্তানি আয়ে পতন অব্যাহত
পরবর্তী নিবন্ধচ্যাম্পিয়ন ইউনিয়ন ব্যাংক ফুটবল দলকে রুপায়ন গ্রুপের সংবর্ধনা