নিউজ ডেস্ক : সাময়িকভাবে পুরোপুরি বন্ধ হওয়া দেশের সর্ববৃহৎ পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগামী ২৬ জুন আবারও উৎপাদন শুরু হতে পারে। প্ল্যান্ট ম্যানেজার প্রকৌশলী শাহ আব্দুল মাওলা জানিয়েছেন, এর আগে আগামী ২৫ জুনের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া থেকে এ দফায় আমদানি করা কয়লার প্রথম জাহাজটি আসছে।
সোমবার (৫ জুন) পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হওয়ার পর থেকে দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এর প্রভাব পড়ছে। তবে এরই মধ্যে আশার আলো দেখতে যাচ্ছে কয়লা সংকটে বন্ধ হওয়া এ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। কয়লা সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার ১০০ মিলিয়ন ডলার সংস্থান করে দেয়ার পরই এলসি (ঋণপত্র) খোলা হয়।
এ বিষয়ে কেন্দ্রটির কর্তৃপক্ষ জানায়, ইন্দোনেশিয়ায় প্রথম জাহাজটিতে কয়লা লোডিং করা হবে ১১ থেকে ১২ জুনের মধ্যে। ২৩ থেকে ২৫ জুনের মধ্যে সেটি পায়রা বন্দরের জেটিতে চলে আসবে।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২৬ জুন বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলী শাহ আব্দুল মাওলা। তিনি বলেন, ‘সহসাই এলসি (ঋণপত্র) কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। তাছাড়া কয়লা নিয়ে জাহাজ আসার আগেই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে রাখব। কাজেই আশা করছি, আগামী ২৬ জুন থেকেই শুরু করা যাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন।’
এদিকে, আশার আলো হচ্ছে, ২৫ জুনের পর কয়লা বোঝাই করে পরপর আরও ১০টি জাহাজ (মাদার ভ্যাসেল) দেশে আসবে। আর তা দিয়ে দেড় থেকে দুই মাস উৎপাদন সম্ভব হবে। সরকার যেভাবে ডলারের সংস্থান করে দিচ্ছে তাতে বকেয়া ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব হবে। তাই দ্বিতীয় বার আর এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা নেই।
প্রকৌশলী শাহ আব্দুল মাওলা আরও বলেন, নিয়মিতভাবে যদি অর্থের সংস্থান হয়, তাহলে আশা করছি, এ বিদ্যুৎকেন্দ্র আর বন্ধ হওয়ার সুযোগ নেই।
বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ সূত্র মতে, কেন্দ্রটির চীনা অংশীদার চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কোম্পানি (সিএমসি) পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনায় প্রয়োজনীয় কয়লা কিনতে ঋণ দেয়। দুটি ইউনিট মিলে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন সক্ষমতা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট। আর পূর্ণ সক্ষমতায় চললে ইউনিট দুটি চালাতে দৈনিক ১২ থেকে ১৩ হাজার টন কয়লার প্রয়োজন হয়। যার পুরোটিই ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করে আসছিল সিএমসি। কিন্তু গত ৬ মাস ধরে কয়লার বিল পরিশোধ করা হয়নি। ফলে চলতি বছেরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত কয়লা বাবদ বকেয়া বিল দাঁড়ায় প্রায় ৩৯০ মিলিয়ন ডলার। বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় সিএমসি কয়লা সরবরাহ বন্ধ করেছিল।