আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইশাক দার গত শুক্রবার মোট ১৪.৫ লক্ষ কোটি টাকা (পাকিস্তানি মুদ্রায়)-র বাজেট পেশ করেছেন। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ৫ লাখ ৪৭ হাজার কোটি টাকা (১ টাকা সমান ২.৬৫ পাকিস্তানি রুপি)। এই হিসাবে পাকিস্তানের চলতি বাজেট বাংলাদেশের ২০২০ সালের বাজেটের চেয়েও ২১ হজার কোটি টাকা কম। ২০২০-২১ সালে বাংলাদেশ ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছিল। পাকিস্তানের বাজেটের অর্ধেক ৭.৩ লাখ কোটি টাকাই ধার মেটানোর কাজে ব্যয় করার কথা বলা হয়েছে। বাজেটের ৯৭ শতাংশ আভ্যন্তরীণ আয় থেকে সংগ্রহ করা হবে বলে বলা হয়েছে। এরমধ্যে রাজস্ব বিভিাগরে আয় ধরা হয়েছে প্রায় ১০ লাখ কোটি রুপি। সূত্র জিও টিভি
চলতি বছরের শেষেই নির্বাচন হওয়ার কথা পাকিস্তানে। তার আগে শুক্রবারই শেষ বারের মতো পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করলেন সে দেশের অর্থমন্ত্রী ইশাক দার। ভোটমুখী বাজেটে কোনও চমকের পথে হাঁটল না শাহবাজ শরিফের সরকার। উল্টে বাজেটের অর্ধেকেরও বেশি টাকা ঋণ মেটানোর জন্যই তুলে রাখা হল। আর্থিক সঙ্কট কাটিয়ে বিনিয়োগকারী এবং বিদেশি ঋণদাতাদের আস্থা অর্জনের জন্যই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
পাকিস্তানের মুদ্রাস্ফীতির হার এখনও আকাশছোঁয়া। বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারও নিঃশেষিত হতে চলেছে। এই অবস্থায় বৈদেশিক বাণিজ্য চালাতে প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে বিনিময় প্রথার অনুকরণে পণ্যের বিনিময়ে পণ্য ফর্মুলায় এগোতে চাইছে পাকিস্তান। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ি পাকিস্তানে ১ মাসের আমদানি খরচ মেটানোর মতো রিজার্ভ মজুদ রয়েছে।
দেশের পরিকাঠামোগত উন্নয়নে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পে ৯৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে। বাজেটে চমক বলতে প্রশাসনিক আধিকারিকদের বেতন ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের অবসরকালীন ভাতাও ১৭.৫ শতাংশ বৃদ্ধি করার কথা জানানো হয়েছে। ভোটের আগে প্রশাসনের সঙ্গে আধিকারিকদের সন্তুষ্ট করতেই পাকিস্তানের শাসক জোটের এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
ঋণ দেওয়ার প্রাথমিক শর্ত হিসাবে আন্তর্জাতিক মূদ্রাতহবিল (আইএমএফ) আগেই পাকিস্তান সরকারকে জানিয়েছিল, নতুন করে কোনও জনমুখী প্রকল্প চালু করতে পারবে না তারা। সেই কথা মাথায় রেখেই শরিফ সরকার কোনও চমক দেখানোর পথে হাঁটল না, না কি পরবর্তী নির্বাচনে জয়ের আশা রয়েছে দেখেই সাহসী পদক্ষেপ করল, তা স্পষ্ট নয়।
শুক্রবার অবশ্য প্রধানমন্ত্রী শরিফ দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কটের দায়ভার চাপিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘাড়েই। জানিয়েছেন, তার ভুল সিদ্ধান্তেই দেশের এই অবস্থা। পাক অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, পাকিস্তানের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধির হার (জিডিপি) ৩.৫ শতাংশ ধরেই বাজেট পেশ করা হয়েছে। যদিও বিশ্বব্যাঙ্ক মনে করছে এই হার ২ শতাংশের বেশি হবে না।