নিজস্ব প্রতিবেদক : এনআরবিসি ব্যাংকের ১০ম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৯ জুন) ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমালের সভাপতিত্বে এটি অনুষ্ঠিত হয়। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত সভায় সব পরিচালক, উদ্যোক্তা ও শেয়ারহোল্ডাররা অংশ নেন।
সভায় ভার্চুয়ালি অংশ নেন ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া আরজু, পরিচালক মোহাম্মদ আদনান ইমাম, এ এম সাইদুর রহমান, মোহাম্মদ ওলিউর রহমান, লকিয়ত উল্লাহ, মোহাম্মদ নাজিম, এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক এয়ার চিফ মার্শাল (অব.) আবু এশরার, ড. খান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, রাদ মজিব লালন, ব্যবস্থাপনা পরিাচলক ও প্রধান নির্বাহী গোলাম আউলিয়া, ডিএমডি ও সিএফও হারুনুর রশীদ, কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আহসান হাবিব প্রমুখ।
এজিএমে ২০২২ সালের জন্য সাড়ে ৭ শতাংশ নগদসহ ১২ শতাংশ লভ্যাংশ অনুমোদন করেন শেয়ারহোল্ডাররা। সভায় গত বছরের নিরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, ডাইরেক্টরস রিপোর্ট, নতুন পরিচালক নির্বাচন, ব্যাংকের নাম পরিবর্তন করে ‘এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসি’ ইত্যাদি এজেন্ডা অনুমোদন করা হয়।
আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যাংকের আমানত ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে ২৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। আগের বছর যা ছিল ১২ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা। ঋণের পরিমাণ ১০ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা। ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩০ শতাংশ। বছর শেষে পরিচালন মুনাফা ৪০৩ কোটি টাকা এবং নিট মুনাফা হয়েছে ১৭৩ কোটি টাকা। শেয়ার প্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ১৯ পয়সায়।
এছাড়া গত বছর ব্যাংকটির মাধ্যমে আমদানি হয়েছে ৩ হাজার ৬০২ কোটি টাকার পণ্য। এসময়ে রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকার পণ্য। এছাড়াও আলোচ্য সময়ে এই ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা।
এজিএমে অংশ নেওয়া সব পরিচালক, শেয়ারহোল্ডার, গ্রাহক ও বিনিয়োগকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল বলেন, এনআরবিসি ব্যাংক প্রান্তিক মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে ক্ষুদ্রঋণের মতো কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এনআরবিসি ব্যাংক। এরই মধ্যে প্রায় ৬০ হাজার মানুষের মধ্যে সহজশর্তে এই ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া, যুবাদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে সহজশর্তে বিনাজামানতে ঋণের ব্যবস্থা করেছে এনআরবিসি ব্যাংক। গত দশ বছরে এনআরবিসি ব্যাংক দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডার হিসেবে অবদান রেখে চলেছে। এনআরবিসি ব্যাংক সবসময় মানুষের পাশে থেকেছে, স্বীকৃতি পেয়েছে মানবিক ব্যাংক হিসেবে।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম আউলিয়া বলেন, সুশাসন, জবাবদিহি এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে পরিচালিত এনআরবিসি ব্যাংক মানুষের কল্যাণে কাজ করে চলেছে। শুধু বৃহৎ শিল্পেই নয়, বিনিয়োগ করছে নানা ক্ষুদ্র উদ্যোগেও। তিনি বলেন, এনআরবিসি ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্প গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। এছাড়া, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত যুবাদের ঋণ প্রদান করছে এনআরবিসি ব্যাংক।
উপশাখার ধারণার প্রবর্তক এনআরবিসি ব্যাংকের ১০৩টি শাখাসহ সেবাকেন্দ্রের সংখ্যা এক হাজার ৬১৬টি। এনআরবিসি ব্যাংক বিআরটিএ’র ফি গ্রহণ, ভূমি নিবন্ধন ফি আদায় করছে। এসব সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে এনআরবিসি ব্যাংক তথ্য-প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে ব্যাংকটি উদ্ভাবনী সেবা ও দ্রুত সময়ে সর্বোত্তম সেবার প্রসারে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছে। ‘মোস্ট ইনোভেটিভ মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপ- প্লানেট’ এবং ‘ফাস্টেস্ট গ্রোয়িং মাইক্রো-ফাইন্যান্স ব্যাংক’ শীর্ষক অ্যাওয়ার্ড দুটি প্রদান করেছে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক শীর্ষ ম্যাগাজিন দ্য গ্লোবাল ইকোনোমিক্স। এছাড়া, ছয়টি ক্যাটাগরিতে সাউথ এশিয়ান বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড লাভ করেছে ব্যাংকটি। কৃষিতে অবদানের জন্য আরটিভি কৃষি পদক, এটিএন বাংলা থেকে পেয়েছে উন্নয়নে বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড।