আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জাহাজভাঙা শিল্পকে পরিবেশবান্ধব করে তুলতে চলতি জুনেই আন্তর্জাতিক সম্মেলন হবে এবং এই প্রথমবারের মতো এই সম্মেলনের আয়োজক দেশ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের শিল্প মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
সম্মেলন কবে হবে— প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশের শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মামুনুর রশিদ রয়টার্সকে বলেন, ‘জুন মাসেই সম্মেলন হবে। আশা করছি, জুনের প্রথম সপ্তাহেই আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলনের দিনক্ষণ জানাতে পারব।’
যে চুক্তির আওতায় এই সম্মেলনের আয়োজন হচ্ছে, তার নাম হংকং কনভেনশন ২০০৯। জাহাজভাঙা শিল্পকে আরও ঝুঁকিমুক্ত ও পরিবেশবান্ধব করে তুলতে জাতিসংঘের জাহাজ বিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) ২০০৯ সালে হংকংয়ে এক সম্মেলনের আয়োজন করে। সেখানেই তোলা হয়েছিল এই চুক্তিটি।
উত্থাপনের পর সম্মেলনে উপস্থিত ৬৩টি দেশ চুক্তিটির স্বীকৃতি দেয় এবং তাদের মধ্যে ভারত-বাংলাদেশসহ ২০টি দেশ সেটিতে স্বাক্ষরও করে। জাহাজভাঙা শিল্পে সবচেয়ে এগিয়ে আছে ভারত। প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে যত মেয়াদোত্তীর্ণ জাহাজ ভাঙা হয়, তার ৩০ শতাংশই হয় ভারতে।
সাগরে চলাচলকারী কোনো জাহাজ যখন তার আয়ুর শেষ সীমায় পৌঁছে যায়, তখন সেটিকে ভাঙার জন্য ইয়ার্ডে পাঠানো হয়। উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে জাহাজভাঙা শিল্পের বিস্তার বেশি দেখা যায় এবং অধিকাংশ দেশেই এই শিল্পের শ্রমিকদের বেশ ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। প্রতি বছর আগুনে বা জাহাজের লোহার পাতের নিচে পিষ্ট হয়ে শ্রমিকমৃত্যু উন্নয়নশীল এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে প্রায় নিয়মিত ঘটনা।
রয়টার্সকে মামুনুর রশিদ বলেন, ‘আইএমও’র সেই সম্মেলনের উদ্দেশ্য ছিল জাহাজভাঙা শিল্পকে আরও পরিবেশবান্ধব এবং ঝুঁকিমুক্ত করে তোলা। এবং চুক্তিতে যেসব দেশ স্বাক্ষর করেছিল— তারা এই ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে দু’বছরের মধ্যে তাদের ইয়ার্ডগুলো পরিবেশবান্ধব করে তোলা হবে। যেসব দেশের ইয়ার্ড পরিবেশবান্ধব— সেসব দেশে এই শিল্পের শ্রমিকদের দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর হার প্রায় শূন্য।’
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক আইনী সংস্থা হলম্যান ফেনউইক উইলানের (এইচএফডব্লিউ) কর্মকর্তা উইলিয়াম ম্যাকলাচান বাংলাদেশের এই সম্মেলন আয়োজনের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘বিশ্বের যেসব দেশে জাহাজভাঙা শিল্প সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ, সেসবের মধ্যে বাংলাদশেও রয়েছে। আমরা আশা করছি, সম্মেলন আয়োজনের পাশপাশি এই শিল্পে ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।’