নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট চলমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও সংকট সমাধানে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
রোববার (১৮ জুন) গুলশানের একটি অভিজাত রেস্তোরাঁয় সিপিডি বাজেট ডায়ালগ-২০২৩ শীর্ষ সেমিনারে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সংস্থাটির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট মূল সামষ্টিক অর্থনৈতিক বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে বলে মনে হচ্ছে। ফলস্বরূপ বাজেটে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা থেকে উল্লেখযোগ্য ব্যবধান রয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেট সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান বাস্তবতা হচ্ছে অত্যধিক মুদ্রাস্ফীতি। চলমান সংকট মোকাবিলায় বাজেট ব্যবস্থায় প্রতিফলন হয়নি। প্রস্তাবিত বাজেট চলমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও সংকট সমাধানে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, নির্বাচনী বছরে কোনোভাবেই এমন বাজেট হতে পারে না। এটা অবৈজ্ঞানিক ও অবাস্তবায়িত বাজেট। এটা অবশ্যই সংশোধন করতে হবে।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর জ্বালানি উপদেষ্টা ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, বড় বাজেট দিয়ে সরকার খুশি হলেও আমরা আতঙ্কগ্রস্ত। বিশেষ করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত অভিঘাতে আছে। এই খাতে এক ধরনের লুণ্ঠনমুখী ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা বর্তমানে বিদ্যুতের কষ্ট রয়েছি।
ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার সমির সাত্তার বলেন, রক্ষণশীল বিনিয়োগের বছর চলছে। এই সময়ে শ্রমিকের মজুরির চাহিদা পূরণের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে। করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ টাকা করলে মুদ্রাস্ফীতির বাজারে কিছুটা সাহায্য করবে বলে মনে করি।
সেমিনারে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও নন-প্রফিট এনজিওগুলোকে কোম্পানি আইনের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শহরের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর দিতে পারলেও কীভাবে একটি গ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে কর্পোরেট কর দেবে। এটা কেমন শিক্ষাবন্ধব বাজেট হলো?
এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, বাজেট পাসের আগে আয়কর আইন পাস করা হচ্ছে। এটা সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। আইনের সঙ্গে অর্থবিলের সম্পর্ক নেই্। কেন এটা করা হচ্ছে, আমরা বোধগম্য নয়।
শ্রমিক নেতা তসলিমা আক্তার বলেন, মূল্যস্ফীতি বর্তমানে ১০ শতাংশের ওপরে। কিন্তু বাজেটে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কথা বলা হয়েছে। ভর্তুকির ও সামাজিক খাত কমানোর কথা বলা হয়েছে। মালিকরা কর ও ব্যবসায় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেলেও শ্রমিকরা বঞ্চিত। শ্রমিকের স্বার্থে সামাজিক সুরক্ষাখাতে বরাদ্দ না কমিয়ে বাড়ানো দরকার।