নিউজ ডেস্ক : অক্টোবরের আগে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল নয়, তবে ভোট যথাসময়ে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, তফসিলের সঙ্গে তো ভোটের সম্পর্ক নেই। তফসিল আমি তিনমাস আগে দিতে পারি, চার মাস আগে দিতে পারি। নির্বাচনের ব্যাপারে আইন আছে কখন করতে হবে। তফসিল কবে দিতে হবে, এই বিষয়ে কিন্তু আইনে বলা নেই।
রোববার (৩০ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে তিনি একথা বলেন।
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলের বিষয়ে তিনি বলেন, তফসিল নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়নি, সিদ্ধান্ত হয়নি। ৯০ দিনের সঙ্গে মিলিয়ে সেপ্টেম্বরে তফসিলের কথা বলেছিলাম। পরে হিসাব মিলিয়ে দেখেছি অক্টোবরের আগে নয়।
তাহলে ভোটটা ডিসেম্বরে হচ্ছে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, অবশ্যই ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহের আগে নয়। এটি তো আমাদের রোডম্যাপে বলে দেওয়াই আছে যে, ডিসেম্বরের লাস্ট উইক অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে। তফসিল আজকে করলাম না কালকে করলাম ওইটা তো ইম্পর্টেন্ট না। ইম্পর্টেন্ট নির্বাচনটা কবে হচ্ছে।
তাহলে আগাম ভোট হচ্ছে না? যথা সময়ে নির্বাচন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগাম ভোট কীভাবে হবে? যদি তফসিল আজকে দিয়ে দেই তাহলে কি আগাম ভোট হবে?
তিনি আরও বলেন, আমার অনুমানে আমি বলেছি অক্টোবরের শেষের দিকে তফসিল হতে পারে। অক্টোবরের শেষের দিকে হতে পারে, নভেম্বরের প্রথম দিকেও হতে পারে। এটি গুরুত্বপূর্ণ কিছু না। তফসিল নিয়ে কিন্তু কোনো আইন নেই কতদিন আগে তফসিল দিতে হবে। নরমালি ৫০ দিন, ৬০ দিন আগে তফসিল দেওয়া হয়।
এদিকে, টেনেট ফিন্যান্স ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপের প্রতিনিধি ও নির্বাচনী পর্যবেক্ষক টেরি এল ইসলে বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অসাংবিধানিক ও অবৈধ। আপনার সংবিধান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুমোদন দেয় না।
ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের আমন্ত্রণে রোববার আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দল নির্বাচন কমিশন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছে।
সকাল ১০টায় আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন বিদেশি পর্যবেক্ষকরা। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল, চার নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন। পর্যবেক্ষক দলে জাপানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সমাজকর্মী ইউসুকি সুগু ও চীনের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সমাজকর্মী এনডি লিন উপস্থিত ছিলেন।
ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহফুজুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ ও সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মজুমদারও উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন আমলে নিয়ে এই জোট নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকারের দাবিতে আন্দোলন জোরদার করে তুলছে।
টানা তিনবার ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগও মাঠের রাজনীতিতে শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে। সরকারি দল বিএনপির দাবিকে পাত্তাই দিচ্ছে না। সংবিধানকে উপলক্ষ মেনে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ।
এদিকে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনী রূপরেখা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলমান মতপার্থক্য ও জটিলতা নিরসনে বিভিন্ন মহল থেকে সংলাপের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নতুন করে আর কোনো সংলাপের উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা নেই নির্বাচন কমিশনের (ইসি)।
গত মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান। তিনি বলেন, সংলাপ নিয়ে ভাবছি না। সংলাপের আর প্রয়োজনীয়তা আছে বলেও আমি মনে করি না। রাজনৈতিক বিষয় রাজনৈতিকভাবেই সমাধান হবে।