নিজস্ব প্রতিবেদক : বাজারে খোলা ভোজ্যতেল বিপণন এবং বিক্রয় পর্যায়ক্রমে বন্ধ করতে চায় সরকার। এ লক্ষ্যে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সর্বোচ্চ কার্যক্রম শুরু করছে। বিধিবদ্ধ আইন অনুযায়ী সবাইকে সমন্বিত করে খোলা ভোজ্যতেল বিপণন এবং বিক্রয় পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করছে সংস্থাটি।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে খোলা ভোজ্যতেল বিপণন এবং বিক্রয় পর্যায়ক্রমে বন্ধ করা লক্ষ্যে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এর কার্যক্রম অবহিতকরণ এবং অধিদপ্তর কর্তৃক সহযোগিতা প্রদান সংক্রান্ত সভায় এ তথ্য জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জমান।
এসময় তিনি বলেন, খোলা সয়াবিন তেল বিক্রির বিষয়ে অধিদপ্তর কর্তৃক অতিসত্বর তদারকি কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। ভোজ্যতেল রিফাইনারিগুলোকে চিঠি দিয়ে জানানো হবে। সেজন্য আমরা যৌথ উদ্যোগে রিফাইনারিগুলোসহ অংশীজনদের নিয়ে সচেতনামূলক সভা আয়োজন করতে পারি।
এ এইচ এম সফিকুজ্জমান বলেন, সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে খোলা তেলের ক্ষতিকর দিকগুলো ভোক্তাদের নিকট তুলে ধরে বিভিন্ন সচেতনতামূলক ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে তা প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। এছাড়াও অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় কোনো পর্বের বিষয় খোলা ভোজ্যতেল সংক্রান্ত নির্ধারণ করেও সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা যেতে পারে।
মহাপরিচালক ভোক্তার নিকট গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য বিশেষত ভোজ্যতেলের মান নিশ্চিত করা এবং খোলা সয়াবিন তেল বিপণন এবং বিক্রয় পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার লক্ষ্যে সবাই একসঙ্গে কাজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী গত বছরের (২০২২) ৩১ জুলাই থেকে বাজারে খোলা সয়াবিন তেল এবং ৩১ ডিসেম্বরের খোলা পাম অয়েল বিক্রি বন্ধ হওয়ার কথা। তবে ওই সময় অবকাঠামো স্থাপনে পিছিয়ে থাকা এবং বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার শঙ্কা তুলে ধরে খোলা সয়াবিন বিক্রি বন্ধ করতে আরও ১৯ মাস সময় চায় বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। ওই সময় খোলা তেল বিক্রি বন্ধে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়ে শিল্প মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে ভোজ্যতেল রিফাইনারিদের সংগঠন।
এদিকে মঙ্গলবার ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এর উদ্যোগে খোলা ভোজ্যতেল বিপণন এবং বিক্রয় পর্যায়ক্রমে বন্ধ করা সংক্রান্ত অ্যাডভোকেসি কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আজকের সভাটি আয়োজন করা হয়।
সভায় জানানো হয়, খোলা ভোজ্যতেলে নির্ধারিত মান অনুযায়ী ভিটামিন ‘এ’ ও ভিটামিন ‘ডি’ পাওয়া যায় না। এছাড়াও খোলা তেলের ক্ষেত্রে ফুড গ্রেড কনটেইনার না হওয়ায় তেলের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয় এবং রিফাইনিং প্রসেসে ব্লিচিং করে তেলের রঙ পরিবর্তনের মাধ্যমেও এর গুণাগুণ নষ্ট হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী মনিটরিংয়ের মাধ্যমে বর্ণিত সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা চায় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ভোক্তা অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারসহ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক এবং প্রধান কর্যালয়, ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয় ও ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের কনসালটেন্ট মোস্তাক হাসান মোহাম্মদ ইফতেখার এবং প্রোগ্রাম ডিরেক্টর প্রফেসর সোহেল রেজা চৌধুরীসহ অন্যান্য প্রতিনিধি।