নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে আসিয়ানের সহায়তা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। শুক্রবার (১৪ জুলাই) ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় ৩০তম আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামে (এআরএফ) দেয়া বক্তৃতায় তিনি এ সহায়তা প্রত্যাশা করেন। রোববার (১৬ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় ৩০তম আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামে (এআরএফ) বক্তৃতা দিচ্ছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোহিঙ্গারা যাতে স্বেচ্ছায় মর্যাদার সঙ্গে নিজ দেশে ফিরতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের নেতৃবৃন্দ ও আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামের (এআরএফ) সদস্যদের আরও জোরালো সমর্থন ও সহায়তা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আঞ্চলিকতা ও বহুপাক্ষিকতাবাদকে শক্তিশালী করতে আসিয়ানের অঙ্গীকারকে কার্যকর ও জোরালো হিসেবে স্বীকার করে ‘আসিয়ান ম্যাটারস: এপিকসেন্টার অব গ্রোথ’ থিমের প্রশংসা করেন ড. আব্দুল মোমেন। এছাড়াও গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে দেশগুলোর আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে আসিয়ানের ভূমিকাও তুলে ধরেন তিনি।
এ সময়ে গত এক দশকে বাংলাদেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। যার মধ্যে রয়েছে, করোনা মহামারি মোকাবিলা, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস, টেকসই স্থাপনায় বিনিয়োগ ও জাতিসংঘের শান্তিমিশনে অবদান।
শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখার (আইপিও) প্রতিও জোর দেন তিনি।
ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি হলো ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখার (আইপিও)। এই অঞ্চলকে ঘিরে ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কী হবে, সেটাই মূলত তুলে ধরা হয়েছে ‘ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখা’ নামের ওই নীতিতে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক উক্তি ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়’।
এ সময়ে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বাংলাদেশের কার্যকর উত্তরণ ও টেকসই লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে প্রযুক্তি হস্তান্তর ও এই খাতে বিনিয়োগের প্রতি জোর দেন আব্দুল মোমেন। জ্ঞানভিত্তিক অগ্রসর অর্থনীতি ও একটি জলবায়ু পরিবর্তনের বৈরী প্রভাব মোকাবিলায় সক্ষম একটি বদ্বীপ গড়ে তোলার প্রতিও জোর দেন বাংলাদেশের এ শীর্ষ কূটনীতিক।
সামগ্রিক নিরাপত্তা, শান্তি ও যৌথ সমৃদ্ধি অর্জনে এআরএফের প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন অব্যাহত রাখার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেন তিনি। এ সময়ে পরবর্তী আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে সংস্থাটির সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হতে বাংলাদেশের প্রার্থিতাকে সক্রিয় সমর্থনে সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো এল পি মারসুদি। এতে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি জোকো উইদোদোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।