নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ থেকে এখন বছরে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের পাটপণ্য রপ্তানি হচ্ছে, যেগুলোর অধিকাংশ বস্তা ও ব্যাগের মতো গতানুগতিক পণ্য। তবে সঠিকভাবে পাটপণ্য বহুমুখীকরণ করা সম্ভব হলে রপ্তানি আগামীতে পাঁচগুণ হবে।
যার জন্য প্রয়োজন সরকারের নীতি সহায়তা বলে মন্তব্য করেছেন আকিজ গ্রুপের চেয়ারম্যান সেখ নাসির উদ্দিন।
স্মার্ট বাংলাদেশ ব্যবসায়ী সম্মেলনে তিনি শনিবার (১৫ জুলাই) এ মন্তব্য করেন।
পাট খাতের সম্ভবনা ও সমস্যা নিয়ে সারাদেশের ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি এ ব্যবসায়ী সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সেখ নাসির উদ্দিন বলেন, এখন সারা পৃথিবীতে পাটের পণ্য পরিবেশসম্মত যুগোপযোগী। যার খড়ি, তন্তু এমনকি পাতা পর্যন্ত আমরা ব্যবহার করতে পারি। এরই মধ্যে বাংলাদেশ থেকে কাপড়ের পরেই প্রায় ১ দশমিক ২ বিলয়ন ডলার রপ্তানি আয় হচ্ছে। আবার পাটের কিছু কাঁচামাল পুনরায় আমদানি হয়ে ফিনিশড পণ্য হিসেবে রপ্তানি হচ্ছে। যেগুলো হিসেবে নিলে আবার পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক হবে এ বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, এখনও এ খাতকে এক বিলিয়ন থেকে পাঁচ বিলিয়নে নেওয়া যাবে। তবে এ চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে এসে শুধুমাত্র এ পাটকে ব্যাগ বস্তার মতো মোড়কজাত উপকরণ রাখলে চলবে না। এটি কটনের সঙ্গে মিশিয়ে কোর্ট-জ্যাকেটের মতো পণ্য তৈরি করতে হবে।
আকিজ গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের বড় পাওয়া যে প্রধানমন্ত্রী এ পাটখাততে অত্যন্ত ভালোবাসেন। এ জন্য আপনার (প্রধানমন্ত্রীর) কাছে আমরা অর্থনৈতিক নয়, নীতি সহায়তা চাই। আপনার সে দরদি দৃষ্টি চাই। যেভাবে আপনি আমাদের পাটকে অন্তর থেকে ভালোবাসেন। আমাদের পাট দিবস দিয়েছেন, যেভাবে আপনি পাটের শাড়ি-ব্যাগ ভালোবেসে বিশ্বময় পরিচিতি দিয়েছেন। আমি বিশ্বাস করি, আপনার ওই দৃষ্টি হলে আমরা অবশ্যই পারবো।
তিনি বলেন, আমাদের বীজ একটি বড় সমস্যা। বীজ পেলে এখনও উৎপাদন ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বাড়বে। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে যেখানে লবণাক্ত জায়গা পড়ে রয়েছে, সেখানে বীজ করতে পারি আমরা। সবমিলে একটি সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। তাহলে যেভাবে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, বাংলাদেশকে কেউ দাবায় রাখতে পারবেনা, আমাদেরও কেউ দাবায় রাখতে পারবে না।
পাটখাতের এ অন্যতম উদ্যোক্তা বলেন, এ পাটখাত ভালোই যাচ্ছিলো। আমরা দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। এ পাট দিয়ে বিএমডাব্লিউ গাড়ির প্যানেল তৈরি হচ্ছিলো। এখন বাংলাদেশের জুটফাইবার (পাটের তন্তু) দিয়ে কোট হচ্ছে। আমি সেটি বানিয়েছি। এরমধ্যে মাত্র ১৫ শতাংশ কটন আছে। এ কোট ইতালি ও ইউরোপে নিয়ে গিয়েছি, সবাই খুব প্রশংসা করছে। আমরা পর্দা বানিয়েছি। এগুলো খুব ভালো। প্রচুর বিনিয়োগের সম্ভবনা রয়েছে এসব খাতে।
তিনি বলেন, কিন্তু গত দুই বছর খারাপ যাচ্ছে। প্রায় ৪০ শতাংশ জুটমিল এখন বন্ধ। এ বন্ধ হওয়ার কারণ পাটের সুতার উচ্চমূল্য। কারণ ২ হাজার টাকার সুতা এখন ছয় হাজার টাকা হয়েছে। এজন্য ইরান তুর্কির মতো অনেক দেশের প্রতিষ্ঠান প্লাস্টিক সুতা ব্যবহার করছে।