স্রোতের বিপরীতে রূপালী লাইফ

নিউজ ডেস্ক : গত সপ্তাহজুড়ে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম কমার তালিকায় ছিল যে কয়টি প্রতিষ্ঠান, তার প্রায় পাঁচগুণ প্রতিষ্ঠান ছিল দাম বাড়ার তালিকায়। এতে বেড়েছে প্রধান মূল্যসূচক। এ সূচক বাড়াতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে বিমা খাতের কোম্পানিগুলো। সপ্তাহজুড়েই সিংহভাগ বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়েছে। এমনকি ডিএসইতে দাম বাড়ার শীর্ষ তিনটি স্থানই দখল করেছে বিমা খাতের কোম্পানি।

গত সপ্তাহজুড়ে একের পর এক বিমা কোম্পানি দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখালেও স্রোতের বিপরীতে হেঁটেছে রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। এ বিমা কোম্পানিটির শেয়ার দাম সপ্তাহজুড়েই কমেছে। বিনিয়োগকারীদের বড় অংশই এ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কিনতে খুব একটা আগ্রহী ছিলেন না। ফলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে দাম কমার শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

গত সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমেছে ২৭ দশমিক ৪২ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ৫৯ টাকা। এতে এক সপ্তাহেই কোম্পানিটির শেয়ার দাম সম্মিলিতভাবে কমেছে ১৭৭ কোটি ৮ লাখ ৩৯ হাজার ৯২৪ টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির শেয়ার দাম দাঁড়িয়েছে ১৫৬ টাকা ২০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ছিল ২১৫ টাকা ২০ পয়সা।

এ দরপতনের আগে প্রায় দুই মাস ধরে কোম্পানিটির শেয়ার দাম ছিল ঊর্ধ্বমুখী। গত ৭ মে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৯১ টাকা ২০ পয়সা। এরপর থেকে কোম্পানিটির শেয়ার দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকে। দফায় দফায় বেড়ে প্রতিটি শেয়ারের দাম ২৪৭ টাকা পর্যন্ত উঠে। এরপর এখন কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমতে দেখা যাচ্ছে।

শেয়ার দামে এমন উত্থান-পতন হওয়া কোম্পানিট সবশেষ ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত বছরে বিনিয়োগকারীদের ১৮ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। তার আগে ২০২০ সালে ১৩ শতাংশ নগদ ও ২ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। ২০১৯ সালে কোম্পানিটি ১২ শতাংশ নগদ ও ২ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়েছিল।

২০০৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি ১ লাখ টাকা। আর শেয়ার সংখ্যা ৩ কোটি ১৪ হাজার ২৩৬টি। এরমধ্যে ৩২ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ শেয়ার আছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ২৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ শেয়ার।

এদিকে দাম কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬৭ কোটি ৭৬ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৫৫ লাখ ২৭ হাজার টাকা।

রূপালী লাইফের পরেই গত সপ্তাহে দাম কমার তালিকায় ছিল ফু-ওয়াং ফুড। সপ্তাহজুড়ে এ কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমেছে ১৪ দশমিক ২২ শতাংশ। ১১ দশমিক ৩২ শতাংশ দাম কামার মাধ্যমে পরের স্থানে রয়েছে ফু-ওয়াং সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ।

এছাড়া গত সপ্তাহে দাম কমার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা জেনারেশন নেক্সটের ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ, প্রোগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ, এমারেল্ড অয়েলের ৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজের ৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ, ঢাকা ডাইংয়ের ৭ দশমিক ১০ শতংশ এবং লুব-রেফ বাংলাদেশের ৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ দাম কমেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহেলথ ইমার্জেন্সি ঘোষণার অবস্থা তৈরি হয়নি : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধবাজার মূলধনে যোগ হলো আড়াই হাজার কোটি টাকা