আগামীর রূপকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশের পাশে থাকতে চায় হুয়াওয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে ২৫ বছরের যাত্রা সম্পন্ন করেছে হুয়াওয়ে। প্রতিষ্ঠানটি দেশের পরবর্তী রূপকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশের পাশে থেকে কাজ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। শুক্রবার (২১ জুলাই) সন্ধ্যায় ঢাকায় অনুষ্ঠিত হুয়াওয়ে বাংলাদেশের ২৫ বছর পূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে আইসিটি অবকাঠামো ও স্মার্ট ডিভাইস প্রদানকারী বিশ্বের নেতৃস্থানীয় এই প্রতিষ্ঠান তাদের সহযোগী, গ্রাহক ও এই খাতের স্টেকহোল্ডারদের অপরিসীম সহযোগিতা, বিশ্বাস ও নির্দেশনার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এই মনোভাবের সঙ্গে মিলে রেখে অনুষ্ঠানের নামকরণ করা হয় ‘২৫ ইয়ারস অব টুগেদারনেস, জার্নি অব ট্রাস্ট, সাপোর্ট অ্যান্ড এমপাওয়ারিং বাংলাদেশ’।

হুয়াওয়ে বাংলাদেশের সিইও ও হুয়াওয়ে সাউথ এশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্যান জুনফেং অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। প্রতিষ্ঠানটির স্মরণীয় এই মুহূর্ত উদযাপন করতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, আইসিটি বিভাগের সচিব মো. শামসুল আরেফিন, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং চট্টগ্রাম এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন টেলিকম অপারেটরগুলোর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, অন্যান্য খাতের স্টেকহোল্ডার ও সহযোগীরা।

অনুষ্ঠানে প্যান জুনফেং বলেন, বহু বছর আগে বাংলাদেশের বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে যাত্রা শুরু করে হুয়াওয়ে। উদীয়মান অর্থনীতি হিসেবে বিকাশের পথে আমরা সবসময় বাংলাদেশের পাশে ছিলাম। কর্মসংস্থান তৈরি, লিঙ্গসমতা নিশ্চিত করা ও আইসিটি ট্যালেন্ট ইকোসিস্টেমের উন্নয়ন ছাড়াও আমরা গত ২৫ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছি। সামনের দিনেও এই ধারা অব্যহত থাকবে। আমাদের ওপর অটুট আস্থা রাখায় বাংলাদেশ ও এই দেশের মানুষের প্রতি আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই। অবিশ্বাস্য এই যাত্রায় অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়ন ও ডিজিটাল রূপান্তরে অবদান রাখতে নিরলস কাজ করে যাবো।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সংযুক্তি। আমরা এরই মধ্যে বাংলাদেশের শতকরা ৯৮ শতাংশ অঞ্চল ফোরজি নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে পেরেছি। আমাদের ডিজিটাল কানেক্টিভিটির ক্ষেত্রে যে রূপান্তর হয়েছে এর পেছনে হুয়াওয়ের অবদান প্রশংসারযোগ্য। আমরা সর্বশেষ ফাইভজি চালু করেছি হুয়াওয়ের সহযোগিতায়। আমি এটা বিশ্বাস করি যে, আগামীতে বাংলাদেশে স্মার্ট রূপান্তরের ক্ষেত্রে হুয়াওয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

‘ইন বাংলাদেশ, ফর বাংলাদেশ’ এই মূলমন্ত্র দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে হুয়াওয়ে ১৯৯৮ সাল থেকে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও ডিজিটাল রূপান্তরে যথাসম্ভব অবদান রেখে চলেছে। প্রতিষ্ঠানটি গত ২৫ বছর ধরে আইসিটি ও টেলিযোগাযোগ খাতে বিভিন্ন সেবা ও উদ্ভাবনী সমাধান, আইসিটি দক্ষতা উন্নয়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ইকোসিস্টেম বিকাশ ও মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে।

টেলিকম খাতের জন্য টুজি, থ্রিজি ও ফোরজি প্রযুক্তি সহজলভ্য করতে ও ফাইভজি প্রযুক্তির অধিগ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে হুয়াওয়ে। ২০১৮ সালে দেশ যখন মাত্র ফোরজি যুগে প্রবেশ করেছে তখন প্রতিষ্ঠানটি ফাইভজি ট্রায়াল সম্পন্ন করে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সালে ফাইভজি প্রযুক্তি উন্মোচনের ক্ষেত্রে বিশ্বের অগ্রগামী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে টেলিটককে সহযোগিতা করে। ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা ২০২৩ -এ প্রতিষ্ঠানটি সর্বাধুনিক ৫.৫জি প্রযুক্তি ও এই খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইউজ কেস (ডিজিটাল রূপান্তর) প্রদর্শন করে। এছাড়া, হুয়াওয়ে ফাইবারের মাধ্যমে ১৫ হাজারেরও বেশি বেইজ ট্রান্সসিভার স্টেশনে (বিটিএস) সংযুক্ত করতে সহযোগিতা করেছে।

২০১৮ সালে হুয়াওয়ে বাংলাদেশে ‘ডিজিটাল পাওয়ার’ সেবা দেওয়া শুরু করে এবং ময়মনসিংহে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ একাধিক বৃহৎ আকারের আইপিপি এবং রুফটপ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছে। এখন পর্যন্ত হুয়াওয়ের নিজস্ব সরঞ্জামের মাধ্যমে প্রায় ৩৮০ মিলিয়ন ইউনিট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সাহায্য করেছে। যার ফলে ১৮০ হাজার টন কার্বন নিঃসরণ কমেছে, যা ২৫০ হাজার গাছ লাগানোর সমান।

এছাড়া ফাইন্যান্স, শিক্ষা, গভর্ন্যান্স, স্বাস্থ্য, মিডিয়া, উৎপাদন, পরিবহন ও অন্যান্য খাতের জন্য সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার ও এআই-নির্ভর ক্লাউড সল্যুশন প্রদান করছে হুয়াওয়ে।

অনুষ্ঠানে স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়নে নিজেদের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে হুয়াওয়ে। একই সঙ্গে পুরোপুরি কানেক্টেড ও ইনটেলিজেন্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও সমাধান (সল্যুশন) নিশ্চিত করতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। যেন সবাই নিরাপদ ও কানেক্টেড (সংযুক্ত) থেকে স্মার্ট সোসাইটির সুফল ভোগ করতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডেঙ্গুতে ১১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২২৪২
পরবর্তী নিবন্ধপ্রথমবারের মতো সিএনএ টেক্সটাইলের ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা: একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত