নিজস্ব প্রতিবেদক : বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, বাংলাদেশের পাটখাতেকে সমৃদ্ধ ও আধুনিক করতে সরকারের ধারাবাহিক সময়োপযোগী পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত থাকবে। বর্তমানে বহুমুখী পাটজাত পণ্য রপ্তানি খাতে নগদ সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি পাটখাতের অংশীজনদের নীতিসহায়তা প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রী।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএসএ) একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএসএ) চেয়ারম্যান শেখ কফিল উদ্দিন, এমপি, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) মো. মাহমুদ হোসেন, অতিরিক্ত (পাট) তসলিম কানিজ নাহিদা, আকিজ জুট মিলস লি. চেয়ারম্যান শেখ নাসিরউদ্দিনসহ অ্যাসোসিয়েশনের নেতা ও মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি আয়ের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য কাঁচাপাটের সরবরাহ নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ জন্য লাইসেন্সবিহীন অসাধু ব্যবসায়ীদের কাঁচাপাট ক্রয়-বিক্রয় ও মজুত হতে বিরত রাখা, ভেজা পাট ক্রয়-বিক্রয় রোধ করা, বাজারে কাঁচাপাটের সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাট অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী মন্ত্রণালয় ও পাট অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০’ অনুযায়ী ১৯ পণ্যে পাটের বস্তা ব্যবহার বাধ্যতামূলক রয়েছে। এসব পণ্যে কেউ যদি প্লাস্টিক ব্যবহার করে তাহলে আইনি ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে। দেশব্যাপী সারাবছর অভিযান চলমান থাকলেও বর্তমান পেক্ষাপটে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করতে হবে।
বিজেএসএ প্রতিনিধিরা জানান, পাটখাতে সরকারের নানামুখী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ফলে জাতীয় অর্থনীতিতে এ খাতটি অসামান্য অবদান রাখছে। বর্তমান টেকসই উন্নয়নের যুগে বিশ্বব্যাপী পরিবেশবান্ধব পাট ও পাট পণ্যের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। পরিবেশবান্ধব পাট পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। করোনা মহামারি পরবর্তী সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট ও পার্শ্ববতী দেশ সমূহের পাটকেন্দ্রীক নীতির কারণে পাট ও পাট পণ্যের রপ্তানি বাণিজ্যের গতি হ্রাস পেয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, দেশে প্রয়োজনীয় কাঁচাপাট সরবরাহ নিশ্চিতকরণ এবং পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির ধারা বেগবান করার লক্ষ্যে সর্বদা পাটের বাজার দর পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। পাট চাষ নিশ্চিতকরণে বীজ সরবরাহ সঠিক রাখার পাশাপাশি কৃষককে অন্যান্য উপকরণ সহায়তার কারণে সম্প্রতি পাটের উৎপাদন বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলশ্রুতিতে পাটকলসমূহ পাট সংগ্রহ করতে পারছে যা রপ্তানি আয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
তিনি আরও বলেন, পাট মৌসুম শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কাঁচাপাট বাজারে আসতে শুরু করেছে। এ মৌসুমে কাঁচাপাটের উৎপাদনও সন্তোষজনক। পাট চাষিরা ভালো পাটের ভালো দাম পাবেন। কোনো কারণে যেন কাঁচাপাটের দাম অসহনীয় না হয় সে জন্য সর্বদা কাঁচাপাটের বাজার পর্যবেক্ষণ করা হবে।