নিউজ ডেস্ক : পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
সোমবার (৩ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ কমিশনের ভবনে ‘টেকনিক্যাল কো-অপারেশন ফর স্ট্রেনদেনিং দি ইকোসিস্টেম অব এসডিজি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বিএসইসি’র পক্ষে চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের পক্ষে বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। এ সময় ইউএনডিপি’র উপ-আবাসিক প্রতিনিধি নগুয়েন থি এনগোক ভ্যান এবং বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদসহ উভয় সংগঠনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সমঝোতা স্মারকের অধীনে ইউএনডিপি বাংলাদেশ এসডিজি ইমপ্যাক্ট স্ট্যান্ডার্ডের ওপর ভিত্তি করে প্রভাব পরিমাপ ও রিপোর্টিং কাঠামো ডিজাইন করতে সহায়তা করবে। এছাড়া, বন্ড বরাদ্দ এবং প্রভাব রিপোর্টিং উন্নয়ন, ইস্যু পূর্ববর্তী থেকে শুরু করে ইস্যু পরবর্তী পর্যন্ত এসডিজি থিম্যাটিক বন্ড পরিচালনা, ইস্যুকারী ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে থিম্যাটিক বন্ড জনপ্রিয় করার জন্য স্টেকহোল্ডারদের সম্পৃক্ততায় সহায়তা এবং সর্বোপরি শক্তিশালী ইকোসিস্টেম তৈরি ও দীর্ঘমেয়াদী সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তাসহ প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে কাজ করবে ইউএনডিপি বাংলাদেশ।
বিএসইসি’র চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বিএসইসি ও ইউএনডিপি’র অংশীদারত্বের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই উদ্যোগটি বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বিএসইসি প্রাণবন্ত বন্ড বাজার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে। আমরা নির্দিষ্ট আয়ের সিকিউরিটিজের জন্য আমাদের গাইডলাইনে গ্রিন বন্ডের জন্য একটি পৃথক বিভাগও অন্তর্ভুক্ত করেছি। আমি বিশ্বাস করি, থিম্যাটিক বন্ড বা সুকুকের মতো অত্যাধুনিক পরিবেশবান্ধব বা গ্রিন আর্থিক পণ্যগুলোকে জনপ্রিয়করণ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার লক্ষ্যসমূহ অর্জনের জন্য দক্ষ পুঁজি সংগ্রহের পাশাপাশি সামগ্রিক বন্ড বাজারকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।’
অর্থনীতিকে পরিবেশবান্ধব করার গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন এবং যতটা সম্ভব দ্রুততার সঙ্গে এটি শুরু করার ওপর জোর দেন বিএসইসি’র চেয়ারম্যান। তিনি ফ্রেমওয়ার্ক ডিজাইন এবং এর প্রাথমিক পাইলটিংয়ে সহায়তার ক্ষেত্রে কমিশনের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন এবং সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দেন।
ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার তার বক্তব্যে থিম্যাটিক বন্ড ফ্রেমওয়ার্ক এবং প্রদত্ত প্রযুক্তিগত সহায়তার গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘থিম্যাটিক বন্ড ফ্রেমওয়ার্ক এবং প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সহায়তা বাংলাদেশে এসডিজি অর্জনের জন্য পুঁজি সংগ্রহের ক্ষেত্রে উপযোগী পরিবেশ তৈরি করতে সাহায্য করবে। ইউএনডিপি বাংলাদেশে এসডিজি অর্থায়নের জন্য একটি ইকোসিস্টেম তৈরিতে সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এজেন্ডা ২০৩০ এবং বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত প্রচেষ্টা এবং প্রতিশ্রুতিগুলোকে বাস্তবায়নে নতুন অর্থ সংগ্রহের ক্ষেত্রটিতে বাংলাদেশকে সমর্থন করার সামগ্রিক লক্ষ্য নিয়ে বিএসইসির সঙ্গে এই সহযোগিতাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরে খুবই আনন্দিত।’
বিএসইসি এবং ইউএনডিপির মধ্যে সহযোগিতার লক্ষ্য হলো—এসডিজি এবং থিম্যাটিক বন্ডের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে দেশের পুঁজিবাজারে পরিবেশবান্ধব অর্থায়নের সুযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব প্রজেক্ট গড়ে তোলা সহজতর হবে। সর্বোপরি দেশের বন্ড বাজার আরও বৈচিত্র্যপূর্ণ ও টেকসই রূপ লাভ করবে।