অ্যাকোয়াকালচার অ্যাক্টিভিটির সেবা পেয়েছেন পৌনে ৪ লাখ মৎস্যচাষি

নিউজ ডেস্ক : অ্যাকোয়াকালচার অ্যাক্টিভিটি প্রকল্পের সহায়তায় প্রান্তিক পর্যায়ে মৎস্যচাষিরা পাচ্ছেন আমানতবিহীন ক্ষুদ্রঋণ। শুধু ঋণ নয়, এ প্রকল্পের সহায়তায় টাকা ছাড়াই মাছের খাবার, ওষুধের মতো জরুরি পণ্য কেনার সুযোগ রয়েছে। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্পটি ২৩ জেলার ৩ লাখ ৮৫ হাজার মৎস্যচাষিকে সেবা দিয়েছে। এতে করে বেড়েছে ব্যবসা, লাভবান হচ্ছেন গ্রামীণ মানুষ।

সোমবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে আয়োজিত দিনব্যাপী ওয়ার্ল্ডফিশের সিনার্জিস্টিক পার্টনারশিপ কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়। কর্মশালায় ইউএসএআইডির অর্থায়নে ওয়ার্ল্ডফিশ বাংলাদেশ কর্তৃক বাস্তবায়িত ফিড দ্য ফিউচার বাংলাদেশ অ্যাকোয়াকালচার অ্যান্ড নিউট্রিশন অ্যাক্টিভিটি (অ্যাকোয়াকালচার অ্যাক্টিভিটি) প্রকল্পের ঢাকার অংশীদারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

চলতি বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশ অ্যাকোয়াকালচার অ্যাক্টিভিটি প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে। প্রকল্প শেষেও এর মাধ্যমে শুরু করা কার্যক্রম যেন অব্যাহত থাকে সেজন্য প্রকল্পের অংশীদারদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করাই এ কর্মশালার উদ্দেশ্য– জানান সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ অ্যাকোয়াকালচার অ্যাক্টিভিটি প্রধান ড. মনজুরুল করিমের বক্তব্যের মাধ্যমে ‘ওয়ার্কশপ অন সিনার্জিস্টিক পার্টনারশিপ’ শিরোনামে আয়োজিত কর্মশালা শুরু হয়।

ড. মনজুরুল করিম বলেন, প্রকল্পটি মূলত বেসরকারি খাতের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করে। মৎস্য খাতের প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য এ প্রকল্পের মাধ্যমে নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগ সুফল বয়ে এনেছে। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটি এর মধ্যে ২৩ জেলার ৩ লাখ ৮৫ হাজার মৎস্যচাষির কাছে সেবা পৌঁছাতে পেরেছে।

মূল উপস্থাপনায় সিনিয়র মার্কেট সিস্টেম স্পেশালিস্ট মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, অ্যাকোয়াকালচার অ্যাক্টিভিটির মাধ্যমে বেসরকারি খাতে যেসব পার্টনারশিপ গড়ে উঠেছে, তারা প্রত্যেকেই ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হয়েছেন। তাদের প্রত্যেকের ব্যবসা বৃদ্ধির হার ন্যূনতম ১০ থেকে ১৫ শতাংশ, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ হার আরও বেশি।

অংশীদারদের পক্ষে অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে গিয়ে পেট্রোকেম বাংলাদেশ লিমিটেডের সিনিয়র ম্যানেজার (মার্কেট ডেভেলপমেন্ট) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, অ্যাকোয়াকালচার অ্যাক্টিভিটির সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে প্রথমে আমরা নারী উদোক্তাদের নিয়ে উইমেন মাইক্রোফ্রাঞ্চাইজি ও পরবর্তীতে ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার গড়ে তুলেছি। মৎস্য খাতে আমাদের অভিজ্ঞতা ছিল না। কিন্তু অ্যাকোয়াকালচার অ্যাক্টিভিটির কারণে আমরা মৎস্য খাতে কাজ শুরু করেছি এবং আমাদের একদম গ্রামীণ পর্যায়ে ব্যবসা সম্প্রসারিত করতে পেরেছি।

ব্যাংক এশিয়ার অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট রোমানা আখতার তুলি অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন বলেন, এই পার্টনারশিপের কারণে আমরা মৎস্য খাতে কাজ শুরু করতে পেরেছি, নতুন গ্রাহক পেয়েছি। আমাদের হাতে ঋণ দেওয়ার মতো টাকা ছিল। আগে আমরা এ টাকা ব্যক্তি পর্যায়ে ঋণ প্রদান করতাম। অ্যাকোয়াকালচার অ্যাক্টিভিটির সহায়তায় আমরা মৎস্যচাষিদের জন্য আমানতবিহীন ছোট আকারে ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া শুরু করি, আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার অংশ হিসেবে। পরে মৎস্যচাষিদের ফিশ কার্ড চালু করি, যার মাধ্যমে মৎস্যচাষিরা নির্দিষ্ট দোকান থেকে টাকা ছাড়াই মাছের খাবার, ওষুধের মতো জরুরি উপাদানগুলো কিনতে পারে।

অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন প্রাইভেট সেক্টরের পেট্রোকেম লিমিটেড, আফতাব ফিড প্রোডাক্টস লিমিটেড, এসকেএফ, ব্রাদার্স সী-ফুড লিমিটেড, গ্রিনডেল বাংলাদেশ লিমিটেড, কোস্ট ফাউন্ডেশন, ব্যাংক এশিয়া, দুরন্ত টিভি, সময় প্রকাশন, বিএসএফএফ, ব্র্যাক হ্যাচারি, সিটি ব্যাংক, সুশীলন, আইমেক্স-প্রো, ম্যাট্রিক্স বিজনেস ডেভেলপমেন্ট, কাস ট্রেড, গড়াই ফিল্মস, এআরআইটিএস লিমিটেড, মার্জেন।

অনুষ্ঠানে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে পেট্রোকেম লিমিটেড এবং ম্যাট্রিক্স বিজনেস ডেভেলপমেন্টের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরূপালী ব্যাংক গাড়ী চালক সমিতির অফিস উদ্বোধন
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশ ফাইন্যান্সের পরিচালক হলেন সাবেক অতিরিক্ত আইজি ফাতেমা