নিউজ ডেস্ক : ‘বাংলাদেশের আর্থিক বাজারের জন্য কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্মের ধারণাটি নতুন। বাংলাদেশের মতো বৃহৎ বাজার বিবেচনায় এ দেশে কমোডিটি এক্সচেঞ্জের সম্ভাবনা অনেক। কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে উন্নয়নের নতুন মাত্রা যোগ হবে। দেশে অতি শিগগিরই কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু হবে।’
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ ভবনে ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (কমোডিটি এক্সচেঞ্জ) বিধিমালা, ২০২৩’ এর খসড়া বিধিমালা বিষয়ে মতবিনিময়কালে বিএসইসি’র কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ উল্লিখিত কথাগুলো বলেন।
তিনি বলেন, একটি সুষ্ঠু ও সুস্পষ্ট আইনি কাঠামোর মাধ্যমে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠা হবে। এটি বাস্তবায়নে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠায় বিএসইসি কাজ করছে।
বিএসইসির কমিশনার ড. রুমানা ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন। কমোডিটি এক্সচেঞ্জের অবারিত সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সকলের সহায়তা কামনা করি।
সভায় ‘কমোডিটি এক্সচেঞ্জ: প্রসপেক্টস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি ডেরিভেটিভস ও ডেরিভেটিভস মার্কেটের ধারণা, কমোডিটি এক্সচেঞ্জের প্রোডাক্ট ও তার লেনদেন, বাংলাদেশে কমোডিটি ডেরিভেটিভস মার্কেটের সুযোগ-সম্ভাবনা, এক্সচেঞ্জে কমোডিটি ডেরিভেটিভের ট্রেডিং মেকানিজম, কমোডিটি ডেরিভেটিভসমূহের ট্রেডিংয়ের ক্লিয়ারিং ও সেটেলমেন্ট প্রক্রিয়া ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া, বাংলাদেশে কমোডিটি ডেরিভেটিভস মার্কেট চালু করার ক্ষেত্রে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ এবং সম্ভাব্য সমাধানের বিষয়ে আলোকপাত করেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় বিএসইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন, এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, এফবিসিসিআই, ডিসিসিআই, বিজিএমইএ, ডিএসই, সিএসই, সিডিবিএস, সিসিবিএল, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন, বসুন্ধরা গ্রুপ ও মেঘনা গ্রুপসহ ব্যাংক এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
কমোডিটি এক্সচেঞ্জ কী
এটি অনেকটা স্টক এক্সচেঞ্জ বা শেয়ার কেনাবেচার বাজারের মতো। স্টক মার্কেটে বহু কোম্পানি মূলধন সংগ্রহ করতে শেয়ার বিক্রি করে, তা কিনে নেন বহুসংখ্যক বিনিয়োগকারী। কমোডিটি এক্সচেঞ্জও তেমনই। তবে এখানে শেয়ার নয়, পণ্য কেনাবেচা হয়। তবে এই পণ্য কেনাবেচা সাধারণ পাইকারি বাজারের মতো নয়। বড় পাইকারি দোকানে (পাইকাররা যাকে মোকাম বলেন) ক্রেতা ও বিক্রেতা সরাসরি দর-কষাকষি করে পণ্য কেনাবেচা করেন। কিন্তু কমোডিটি এক্সচেঞ্জে ক্রেতা ও বিক্রেতার সরাসরি পণ্য কেনাবেচার সুযোগ নেই। অনেকটা শেয়ারের মতো বিক্রেতার দেওয়া পণ্যের সার্টিফিকেট (মান সনদসহ) বিক্রি হয়। মান সনদ দেখেই পণ্যের গুণগত মান বিষয়ে নিশ্চিত হন ক্রেতা এবং অন্য দেশে থেকেও শেয়ার কেনাবেচা করেন।
শেয়ারবাজারের মতো কমোডিটি এক্সচেঞ্জেও নির্দিষ্ট ও অনুমোদিত ব্রোকারের মাধ্যমে পণ্য কেনাবেচা করতে হয়। থাকতে হয় নিজ বা প্রতিষ্ঠানের নামে অ্যাকাউন্ট। একেবারে স্টক মার্কেট থেকে শেয়ার কেনাবেচার মতো ব্যাপার। এ বাজারে পণ্য কিনে তা ডেলিভারি না নিয়ে ক্রয়কৃত সার্টিফিকেট অন্য কারও কাছে বিক্রিও করা হয়। অনেকটা মিলগেটে ডেলিভারি অর্ডার বা ডিও কেনাবেচার মতো।