নিজস্ব প্রতিবেদক : কৃষ্ণসাগর দিয়ে শস্য রপ্তানি চুক্তি থেকে সরে এসেছে রাশিয়া। ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ বা বিএসজিআই চুক্তি রাশিয়ার বন্ধ করার সিদ্ধান্তের কারণে গমের সুষ্ঠু সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশংকা রয়েছে। এতে লাখ লাখ মানুষের খাদ্য ঘাটতির বিষয়ে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন। বুধবার (১৯ জুলাই) এক যৌথ বিবৃতিতে এ উদ্বেগ্নের কথা জানায় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই, ডিসিসিআই, এমসিসিআই, আইসিসি বাংলাদেশ, সিসিসিআই এবং এফআইসিসিআই।
১৭ জুলাই থেকে থেকে এ চুক্তি বাতিল করার ঘোষণা দেয় রাশিয়া। জাতিসংঘকে দেশটি জানায় তারা ইউক্রেনের সঙ্গে চুক্তিটি আর নবায়ন করবে না। এতে বড় শঙ্কার মধ্যে পড়তে পারে বাংলাদেশের খাদ্য ও সার সরবরাহ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তিটির আগ পর্যন্ত কৃষ্ণসাগর দিয়ে পণ্য পরিবহন বন্ধ ছিল।
শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর সভাপতি স্বাক্ষরিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, বিএসজিআই চুক্তি নবায়ন না হলে শুধুমাত্র মানবসৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়-ই ঘটবে না বরং বর্তমান বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণও ব্যহত হবে। বিএসজিআই-এর অধীনে ৩২ মিলিয়ন মেট্রিক টন খাদ্যসামগ্রী তিনটি ইউক্রেনীয় বন্দর থেকে তিনটি মহাদেশের ৪৫টি দেশে রপ্তানি করা হয়েছে যা-ব্ল্যাকসির মাধ্যমে গম স্বল্পোন্নত অর্থনীতিতে রপ্তানি করা হয়। এর ফলে পরিস্থিতি যুদ্ধ-পূর্ব স্তর থেকে অনেকাংশে অপরিবর্তিত ছিল। বিশেষ করে আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, সোমালিয়া, সুদান এবং ইয়েমেনে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মানবিক কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে ব্যাহত হবে এবং লাখ লাখ মানুষ, বিশেষত: শিশুরা খাদ্য ঘাটতির সম্মুখীন হবে। ইউক্রেনীয় এবং রাশিয়ান খাদ্য ও সার রপ্তানি অব্যাহত রাখা বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এ প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা, জোরালোভাবে এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সমর্থন করে। কারণ রাশিয়া থেকে অর্থপ্রেরণ, বিমা এবং রাশিয়ার নিজস্ব কৃষিপণ্য রপ্তানির বর্তমানে প্রযোজ্য নিষেধাজ্ঞা (স্যাংশন) প্রত্যাহারের মাধ্যমে বিএসজিআই চুক্তির নবায়ন বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তার জন্য অত্যাবশ্যক।
অন্যদিকে চুক্তি স্থগিতের পরপরই আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম টনপ্রতি ১০ থেকে ১৫ ডলার বেড়েছে বলে জানা গেছে। একদিনের ব্যবধানে প্রতি টন গমের দাম ২৫০ ডলার থেকে বেড়ে ২৬০-২৬৫ ডলারে উঠেছে। রাশিয়াকে অধিভুক্ত অঞ্চল ক্রিমিয়ার সঙ্গে সংযুক্তকারী ১৯ কিলোমিটার সড়ক ও রেল সেতুতে সোমবার ভোরের কিছুক্ষণ আগে বিস্ফোরণ ঘটে। ক্রিমিয়ান সেতুতে হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শস্যচুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দেয় দেশটি।