নিউজ ডেস্ক : রাষ্ট্রমালিকানাধীন দেশের সব চেয়ে বড় ব্যাংক সোনালী ব্যাংক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও সব সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে। চলতি বছরের প্রথম অর্ধবার্ষিকীতে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকসমূহের মধ্যে পরিচালনায় মুনাফায় রেকর্ড ১ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা করেছে সোনালী ব্যাংক পিএলসি, যা গত বছরের একই
সময়ে পরিচালন মুনাফার চেয়ে ৬৩৪ কোটি টাকা বেশি। গত বছরে এই সময়ে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা ছিলো ১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা।
একই সময়ে সোনালী ব্যাংকে ঋণ ও অগ্রিমের পরিমাণ বেড়েছে ১৫ হাজার ১৭ কোটি টাকা। চলতি বছরের জুন শেষে যার পরিমাণ ৯০ হাজার ৮২ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিলো ৭৫ হাজার ৬৫ কোটি টাকা। একই সময়ে আমানত ও ঋণের অনুপাতের হার ৫৪.২৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৬০.৫৪ শতাংশ হয়েছে, অর্থাৎ বৃদ্ধির হার ৬.২৯ শতাংশ। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে ব্যাংকটির আমানত বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা। ২০২২ সালের একই সময়ে আমানতের পরিমাণ ছিলো ১ লক্ষ ৩৮ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা, যা চলতি বছরে অর্ধবার্ষিকী শেষে হয়েছে ১ লক্ষ ৪৮ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা। এছাড়া শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে ১১২ কোটি টাকা। ২০২২ সালে শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ের পরিমাণ ছিলো ১৬৫ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত আদায়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২৭৭ কোটি টাকা। একই সময়ে ব্যাংকের শ্রেণিকৃত ঋণের হার ১৬.২২ শতাংশ হতে হ্রাস পেয়ে ১৩.৪০ শতাংশে অবনমিত হয়েছে। এদিকে ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট সোনালী ব্যাংকের সিইও এন্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টও (এমডি) হিসেবে মোঃ আফজাল করিম দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই তিনি প্রযুক্তিনির্ভর সেবার পরিধি আরও বৃদ্ধিসহ ব্যাংকের সার্বিক ব্যবসা বৃদ্ধিতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এরমধ্যে খেলাপী ঋণ হ্রাস, ঋণ ও আমানত বৃদ্ধি, আমানত-ঋণ অনুপাত বৃদ্ধি, লোকসানি শাখা কমিয়ে আনা, বিভিন্ন নতুন ঋণ ও আমানত স্কিম চালু, ব্যাংকের সার্বিক সূচকগুলোর মান উল্লেখযোগ্য উন্নতি লাভ করেছে। এছাড়া গ্রাহকের দোড়গোড়ায় ব্যাংকিংসেবা পৌঁছানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রযুক্তিনির্ভর সেবা চালু ও পরিধি বৃদ্ধি করেছেন। এরমধ্যে সোনালী পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে পাঁচ শতাধিক প্রতিষ্ঠান যুক্ত হয়েছে এবং ডিজিটাল ব্যাংকিংসেবার মাধ্যমে মানুষ সহজেই সকল ব্যাংকিং সুবিধা পাচ্ছে। এটিম বুথের সংখ্যা বৃদ্ধি, ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডেও সংখ্যা বৃদ্ধিসহ নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সাফল্যের ধারাবাহিকতা বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের সিইও এন্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আফজাল করিম বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও সোনালী ব্যাংক বিভিন্ন সূচকে উন্নতি করেছে। দেশের ব্যাংকিং খাত এগিয়ে যাচ্ছে। বছর শেষে সোনালী ব্যাংক ৩ হাজার কোটি টাকা মুনাফা ছাড়িয়ে যাবে আশা ব্যক্ত করেন এমডি আফজাল করিম।
তিনি বলেন, জনগণের ব্যাংক হিসেবে সোনালী ব্যাংকের প্রতি গ্রাহকের আস্থা এবং ব্যাংকের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিশ্রমের ফলে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, গ্রাহকের সেবাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য আমরা প্রতিনিয়ত ব্যাংকিং সেবা আরও আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর ও গ্রাহকবান্ধব করে তুলতে সচেষ্ট রয়েছি। চলতি বছরের শুরু হতে ক্রমান্বয়ে সোনালী ই-সেবা মোবাইল অ্যাপের আইওএস ভার্সনের মাধ্যমে বিদেশ থেকে হিসাব খোলা, ই-ওয়ালেট মোবাইল অ্যাপের আইওএস ও এন্ড্রয়েড ভার্সনের মাধ্যমে দেশ-বিদেশ হতে লেনদেন এবং কিউআর কোডের মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন, ২৪ ঘণ্টা কল সেন্টার (নম্বর ১৬৬৩৯) সেবা চালু করা হয়েছে। এর সুফল হিসেবে নানা সূচকে সোনালী ব্যাংক এগিয়ে রয়েছে।