নিজস্ব প্রতিকবেদক : টানা পতন থেকে বেরিয়ে মূল্যসূচকে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছিল। ২০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে যাওয়া লেনদেন বেড়ে ৫০০ কোটি টাকার ঘরে উঠে ছিল। এতে পতন কাটিয়ে শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরছে, এমনটাই প্রত্যাশা করছিলেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু তাদের সেই আশা পূরণ হয়নি।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) শেয়ারবাজারে ফের দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। সেইসঙ্গে ডিএসইতে লেনদেন কমে ৫০০ কোটি টাকার ঘর থেকে ৩০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে। এর মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবস বাড়ার পর কমলো মূল্যসূচক।
মূল্যসূচক ও লেনদেন কমার পাশাপাশি দুই বাজারেই যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার তিনগুণ বেশি। অবশ্য দাম বাড়া বা কমার তুলনায় দাম অপরিবর্তিত থাকা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেশি রয়েছে।
দাম অপরিবর্তিত থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোরপ্রাইসে আটকে রয়েছে। ক্রেতা না থাকায় যাদের কাছে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট আছে, তারা তা বিক্রি করতে পারছেন না।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৪ পয়েন্ট কমে যায়।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার প্রবণতা লেনদেনের প্রায় পুরো সময়জুড়ে অব্যাহত থাকে। তবে, দুপুর ১২টার দিকে দাম কমার থেকে দাম বাড়ার তালিকা কিছুটা বড় হয়। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু সূচকের এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বেশি সময় স্থায়ী হয়নি।
দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে আবার একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমতে থাকে। ফলে আবারও দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকা বড় হয়। এ প্রবণতা চলে লেনদেনের শেষপর্যন্ত। এতে একদিকে দাম কমার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে সবকটি মূল্যসূচক কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে মাত্র ৩৩ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৭টির। আর ১৬০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৮ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৯০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৭১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৩৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের গতিও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৯১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৫৪০ কোটি ৯ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ১৪৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
গত কয়েক কার্যদিবসের মতো লেনদেনের শীর্ষ স্থানটি ধরে রেখেছে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৫ কোটি ৮৩ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এমারেল্ড অয়েলের ২০ কোটি ৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জেমিনি সি ফুড, সোনালী পেপার, ইস্টার্ন হাউজিং, মিরাকেল ইন্ডাস্ট্রিজ, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ এবং এসকে ট্রিমস।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৬০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৪টির এবং ৭৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১০ কোটি ৭১ লাখ টাকা।