লালমনিরহাট প্রতিনিধি : উজানের ঢল ও বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে প্লাবিত হয়েছে তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি। বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। এদিকে পানি নিয়ন্ত্রণের ব্যারাজে ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (১৪ আগস্ট ) ভোর ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)।
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় লালমনিরহাটের ৫ উপজেলার তিস্তা চর অঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। তলিয়ে গেছে চরের রাস্তাঘাট। পানি বৃদ্ধির ফলে নতুন নতুন এলাকায় প্লাবিত হচ্ছে। ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানিতে তলিয়ে গিয়ে দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয়রা। দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বন্যা।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় প্রকৌশলী মো.রাশেদীন বলেন, আগে থেকেই পানি বাড়ার পূর্বাভাস ছিল। রাত থেকে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। কোথাও কোনো সমস্যা হলে, বাধ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা মোকাবিলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রস্তুত আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জ, ঝাড়সিংহেশ্বর, খগারচর, জুয়ার চর, বাংলাপাড়া, উত্তর খগাখড়িবাড়ী, বাইশপুকুর ও জলঢাকা উপজেলার ফরেস্টের চর, ভাবনচুর, ডাউয়াবাড়ীসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় পানি উঠেছে। ফলে কিছু এলাকার বাসিন্দারা গবাদি পশু নিয়ে উঁচুস্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের রুমি বেগম বলেন, রাত থেকে পানি বেড়ে বর্তমানে ঘরের উঠার উপক্রম হয়েছে। এমন অবস্থায় গরু, ছাগল, বাচ্চাদের নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। জানি না কি হবে।
খগাখড়িবাড়ি দহলপাড়া এলাকার হাসানুর রহমান বলেন, কয়েকদিন থেকে বৃষ্টির জন্য কাদা আর মাঠে অল্প পানি ছিল। আজ খেত খামার তলিয়ে গেছে। অবস্থা ভালো না। সামনে একটা ব্রিজের কাজ হচ্ছে সেখানে কাঠের সেতুটা তলিয়ে গেছে মানুষ যেতে পারছে না। সব দিক দিয়েই বিপদে আছি।
ডিমলা উপজেলার খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিথন বলেন, রাতে পানি বেড়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। কিছামতের চর, দহলপাড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় পানি উঠেছে। পানিবন্দিদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পরামর্শ দিচ্ছি আমরা।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় প্রকৌশলী মো.রাশেদীন জানান, আগে থেকেই পানি বাড়ার পূর্বাভাস ছিল। রাত থেকে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। কোথাও কোনো সমস্যা হলে, বাধ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা মোকাবিলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রস্তুত আছে।