এজেন্টের মাধ্যমে বিক্রি হবে মিউচুয়াল ফান্ড

নিউজ ডেস্ক : দেশে মিউচুয়াল ফান্ড জনপ্রিয় করতে এজেন্টের মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া চ্ছে। এ লক্ষ্যে ‘লাইসেন্সড মিউচুয়াল ফান্ড সেলিং এজেন্ট প্রোগ্রাম’ চালু করার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম)।

বিআইসিএমের কোর্স সম্পন্ন করে যে কেউ মিউচুয়াল ফান্ড বিক্রির এজেন্ট হিসেবে কাজ করতে পারবেন। একজন এজেন্ট তার ইচ্ছা অনুযায়ী যত খুশি ফান্ড ম্যানেজারের মিউচুয়াল ফান্ড বিক্রি করতে পারবেন।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বিআইসিএমের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তার বলেন, মিউচুয়াল ফান্ড রুলস ২০০১-এ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে যে বিআইসিএম থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোর্স সম্পন্নকারীরা মিউচুয়াল ফান্ড সেলিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করতে পারবে। এ লক্ষ্যে বিআইসিএম এই লাইসেন্সড মিউচুয়াল ফান্ড সেলিং এজেন্ট কোর্স চালুর ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে এর কারিকুলাম ডিজাইনে ইনস্টিটিউটের অনুষদ সদস্যরা খসড়া তৈরি করেন। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সহায়তায় এই ইন্ডাস্ট্রিতে যারা শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছেন এবং যাদের এ সংক্রান্ত তাত্ত্বিক এবং বাংলাদেশের বাস্তবতার ভিত্তিতে প্রায়োগিক জ্ঞান রয়েছে, এরকম বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ইনস্টিটিউটের অনুষদ সদস্যরা কর্মশালায় মিলিত হন।

এরপর আরেকটি কর্মশালার মাধ্যমে এর কারিকুলাম পূর্ণাঙ্গ রূপ দেওয়া হয়। তারপর এটি ইনস্টিটিউটের একাডেমিক কমিটিতে উপস্থাপন করা হয় এবং সর্বশেষ পরিচালনা পর্ষদের সভাতে এ ব্যাপারটি জানানো হয়। কয়েক ধাপে এর কারিকুলাম চূড়ান্ত করার কারণে আমরা বলতে পারি যে এর কারিকুলামে বাস্তবসম্মত এবং প্রায়োগিক ব্যাপারটি পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে।

তিনি জানান, প্রোগ্রামটি ৩০ ঘণ্টার মোট ৯টি মডিউলে বিভক্ত। যা ৪ দিনে বা ৯ দিনে সম্পন্ন করা হবে। এ ব্যাপারে অংশগ্রহণকারীদের রেসপন্স জানার পর এটা চূড়ান্ত করা হবে। ক্লাসগুলো বিআইসিএমের ক্যাম্পাসেই হবে এবং প্রতি ব্যাচে আপাতত ১৫ জনকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে।

তিনি আরও জানান, কোর্স ফি থাকবে ১২ হাজার টাকা। তবে প্রথম তিনটি ব্যাচের জন্য ৫০ শতাংশ ছাড়ে প্রোগ্রামটি চলমান থাকবে। আর গ্রুপ রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রেও থাকবে বিশেষ ছাড়। অভিজ্ঞ এবং এ পেশাতে বা সমগোত্রীয় পেশায় যারা এরই মধ্যে আছেন, তাদের জন্য ক্ষেত্রবিশেষে বৃত্তি দেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- আইডিএলসি এসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার কাজী মাশুক-উল হক, শান্তা এসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হাসান, গ্রিন ডেল্টা ড্রাগন এসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শাহবাজ তালাত, ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) সভাপতি জিয়াউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আবু আলী প্রমুখ।

কাজী মাশুক-উল হক বলেন, আমাদের পার্শবর্তী দেশ ভারতে মিউচুয়াল ফান্ড বেশ জনপ্রিয়। সেখানে এজেন্টের মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ড বিক্রির কার্যক্রম চালু আছে। আমাদের দেশে মিউচুয়াল ফান্ড এখনো সেভাবে জনপ্রিয় হয়নি। এর মাধ্যমে (এজেন্টের মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ড বিক্রি) দেশে মিউচুয়াল ফান্ডকে জনপ্রিয় করা যাবে।

বর্তমানে শেয়ারবাজারে যেসব মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে তার বেশিরভাগের দাম এনএভি’র অনেক নিচে। এরপরও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। আবার ফান্ড ম্যানেজারগুলোর দক্ষতার অভাব রয়েছে এবং অতীতে বিভিন্ন অনিয়মের তথ্যও পাওয়া গেছে। এ পরিস্থিতিতে এজেন্টের মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ড বিক্রির উদ্যোগ কতটা সফল হবে- সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের উত্তরে ইমরান হাসান বলেন, আমরা আশা করি উদ্যোগটা সফল হবে।

তিনি বলেন, বর্তমানে শেয়ারবাজারে অনেক মিউচুয়াল ফান্ড এনএভি’র তুলনায় অনেক কম দামে বিক্রি হচ্ছে। কিছু মিউচুয়াল ফান্ড ভালো করতে পারছে না। তার মানে এই নয় সব মিউচুয়াল ফান্ড খারাপ। বেশ কিছু মিউচুয়াল ফান্ড ভালো করছে। এজেন্টরা এক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ দিতে পারবেন। কোন মিউচুয়াল ফান্ড ভালো করছে, কোনটি খারাপ করছে তার তথ্য তুলে ধরে এজেন্টরা বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ দিতে পারবেন।

সিএমজেএফ সভাপতি জিয়াউর রহমান বলেন, এটি (এজেন্টের মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ড বিক্রি) একটি ভালো উদ্যোগ। তবে অতীতে মিউচুয়াল ফান্ড নিয়ে বেশকিছু অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে। সাম্প্রতিক সময়েও অনিয়ম হয়েছে। তাই ফান্ড ম্যানেজাররা যেন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির আওতায় থাকে সেটিরও ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে এর সুফল পাওয়া যাবে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজনতা ব্যাংকের তিন মাসে আমানত বেড়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা: এমডি আবদুল জব্বার
পরবর্তী নিবন্ধপরিবেশ তৈরি আছে, এখন প্রচুর বিনিয়োগ প্রয়োজন: পরিকল্পনামন্ত্রী