পরিবেশ তৈরি আছে, এখন প্রচুর বিনিয়োগ প্রয়োজন: পরিকল্পনামন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক : পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, বাংলাদেশে আমরা বিদেশি বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করেছি। এখন প্রচুর বিনিয়োগ প্রয়োজন।

তিনি বলেন, আমাদের জনগোষ্ঠীর বড় একটা অংশ যুবগোষ্ঠী। সড়কে বিশাল অবকাঠামোয় নজর দিয়েছি। জলপথেও শক্তিশালী যোগাযোগ তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে পূর্ব ও পশ্চিমের যোগাযোগের হাব হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘কমনওয়েলথ মিনিস্টারিয়াল প্যানেল: অ্যাটরাক্টিং ইনভেস্টমেন্ট, কমনওয়েলথ এক্সপারটাইজ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া, বেজার চেয়ারম্যান ইউসুফ হারুনসহ উগান্ডার বাণিজ্যমন্ত্রীসহ বিদেশি কমনওয়েলথের সদস্যরা।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমরা বিডা, বেজাসহ সব সংস্থার মাধ্যমে বিনিয়োগ চাই। বিদেশি পুঁজিকে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দিয়ে এখানে বিনিয়োগের সুযোগ দিচ্ছি। শ্রম ছাড়া পুঁজি চলতে পারে না। শ্রমিকের যেন চলাচল মুক্ত হয়। পুঁজিবান্ধব আইন আছে, এটিকে সবসময় আরও উন্নত করার চেষ্টা করি।

এম এ মান্নান বলেন, আমরা বিদ্যুৎ সমস্যা থেকে বেরিয়ে এসেছি। জ্বালানি ক্ষেত্রে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বেরিয়ে আসছি ধীরে ধীরে।

তিনি বলেন, পাসপোর্ট-ভিসার জটিলতার মাধ্যমে এসময়ে নিষ্ঠুরভাবে শ্রম দিতে হচ্ছে। কাজের জন্য গিয়ে ইউরোপে ভূমধ্যসাগরে শ্রমিকরা ডুবে মরছে। অর্থনৈতিক অভিবাসী তারা। পুঁজির মত শ্রমেরও বিশ্বায়ন হওয়া প্রয়োজন।

মন্ত্রী বলেন, চলাফেরায় পাসপোর্ট-ভিসায় মানুষের যে যন্ত্রণা সেটি যেন ধীরে ধীরে সরানো হয়। আমাদের ১ কোটি ১৫ লাখ মানুষ সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক অভিবাসী হয়েছেন। সে দিক থেকে বাংলাদেশ শক্তিশালী ভিসা ও পাসপোর্টের ব্যবস্থা করতে প্রস্তুত।

খাতভিত্তিক বিনিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কাপড়ের ম্যানুফ্যাকচারিং করতে আমরা নিজেরাই সক্ষম। এখন আমাদের চামড়া, পাট, ইলেকট্রনিক ও ওষুধ শিল্পে বড় বিনিয়োগ প্রয়োজন। ওষুধে ভালো ও দক্ষ কর্মী আছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিশেষত যারা ক্যানসারের প্রতিরোধের মত উচ্চ পর্যায়ের ওষুধ তৈরি করেন তারা আসলে এখানে ভালো করবেন।

তিনি বলেন, এখানে যারা এসেছেন তারা বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের লোক। কিন্তু কোনো পুঁজিপতি বা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি এখানে আসেনি। উগান্ডা, টোগো ও ট্রুভ্যালুর মন্ত্রীদের সঙ্গে এখানে কথা হয়েছে। আমরা যারা এখানে এসেছি, পুঁজির চলাচল কীভাবে আরও সহজ করেছি তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি তাদের বলেছি, আমাদের এখানে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কৃত্রিম কোনো বাধা নেই।

এসময় বিডার চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, বাংলাদেশ পরবর্তী চীন হতে যাচ্ছে। আমাদের মেধাবী জনগোষ্ঠী আছে। বিশ্বের নবম শীর্ষ ভোক্তা বাজার আমাদের। আমাদের পোশাক কারখানাগুলোর মধ্যে ১৫০টি আন্তর্জাতিক সনদপ্রাপ্ত।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাছ উৎপাদনকারী দেশ। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর আমাদের গেম চেঞ্জার হতে যাচ্ছে। জাইকার অর্থায়নে করা এ বন্দরের কার্যক্রম ২০২৭ সালের মধ্যে পুরোপুরিভাবে শুরু করতে পারবো।

এসময় বেজার চেয়ারম্যান ইউসুফ হারুন বলেন, বাংলাদেশে এখন অর্থনৈতিক সংস্কার হচ্ছে। আমাদের এখন স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি প্রয়োজন। বেজা সব বিনিয়োগকারীদের সমানভাবে সুযোগ দিচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশের ৪৭ হাজার হেক্টর জমিতে আমাদের অর্থনৈতিক জোনগুলো তৈরী হচ্ছে। এরমধ্যে চারটি অর্থনৈতিক অঞ্চল জি টু জি ভিত্তিতে হচ্ছে। ভারত, জাপান, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া সেখানে বিনিয়োগ করেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএজেন্টের মাধ্যমে বিক্রি হবে মিউচুয়াল ফান্ড
পরবর্তী নিবন্ধভালো গার্মেন্টসকে পুঁজিবাজারে আনতে বিজিএমইএ ও ডিএসইর চুক্তি