
নিউজ ডেস্ক : নতুন নতুন প্রোডাক্টের মাধ্যমে জনগণকে সম্পৃক্ত করে বিমা বাজার আরও সম্প্রসারিত করতে হবে। বিমা বাজার সম্প্রসারণে নতুন নতুন প্রোডাক্ট আনছে চতুর্থ প্রজন্মের জীবন বিমা কোম্পানি চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিমা খাতের সাংবাদিকদের সংগঠন ইন্স্যুরেন্স রিপোর্টার্স ফোরামের (আইআরএফ) সদস্যদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম জিয়াউল হক এসব কথা বলেন।
রাজধানীর রামপুরায় চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব কার্যালয়ে আইআরএফ’র কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মশালায় আইআরএফ’র ২৬ জন সদস্যের উপস্থিতি ছিলেন। কর্মশালায় আইআরএফ সভাপতি গাজী আনোয়ারুল হকের সভাপতিত্বে সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন।
তিনি বলেন, নতুন নতুন প্রোডাক্টের মাধ্যমে জনগণকে সম্পৃক্ত করে বিমা বাজার আরও সম্প্রসারিত করতে হবে। চার্টার্ড লাইফ তার বাজার সম্প্রসারণে নতুন বেশ কিছু প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করছে। প্রতিনিয়তই সেসব প্রোডাক্টের চাহিদা বাড়ছে। কর্মশালায় আগত সদস্যদের বিমা খাতের বিনিয়োগ, রিটার্ন এবং ব্যবস্থাপনা ব্যয় বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এ ছাড়া, উপস্থিত সদস্যদের বিমা বিষয়ক নানা প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
তিন পর্বের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় আইআরএফ সদস্যদের দিনের শুরুতে বিমা খাতের খুঁটিনাটি সম্পর্কে অবগত করেন এসএম জিয়াউল হক। এরপর কোম্পানির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মনজুর আহমেদ বিমা কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন সম্পর্কে ধারণা প্রদান করে। শেষ পর্বে কোম্পানিটির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ চার্টার্ড লাইফের বেশি কিছু নতুন প্রোডাক্ট সম্পর্কে আইআরএফ সদস্যদের অবগত করেন।
সদস্যদের প্রশ্নের জবাবে এসএম জিয়াউল হক বলেন, চার্টার্ড লাইফের বিনিয়োগের প্রায় ৬০ শতাংশ রিটার্ন আসছে পুঁজিবাজার থেকে। বিমা কোম্পানিগুলোকে যেখানে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকি কম সেখানে বিনিয়োগ করতে হয়। ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগের প্রধান জায়গা হচ্ছে বন্ড। কিন্তু বন্ড থেকে যে আয় আসে সেটি খুবই অপর্যাপ্ত। তাই ভালো রিটার্নের জন্য পুঁজিবাজার। এ কারণে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হয়।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নতুন কোম্পানি হিসেবে আমাদের এখনও বড় ধরনের কোনও বিমাদাবি পরিশোধ করতে হয়নি। তবে ২০২৫ সালের পর আমাদের বেশিরভাগ পলিসির মেয়াদ শেষ হবে। তখন কোম্পানিটির দাবি পরিশোধে মোটা অংকের অর্থের প্রয়োজন হবে বলে জানান তিনি। আমরা সেটিকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি, যাতে চার্টার্ড লাইফ যে কোনও সময় স্বাচ্ছন্দ্যে গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে পারে।
অর্থনীতিতে বিমার অবদান বিষয়ে আরেক এক প্রশ্নের জবাবে চার্টার্ড লাইফের সিইও বলেন, নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য একমাত্র ইন্স্যুরেন্সই উপযুক্ত মাধ্যম। সার্বজনীন পেনশন বিমা প্রাইভেট সেক্টরের মাধ্যমে হলে এর সুফল বেশি পাওয়া যাবে বলে মনে করেন তিনি।
কোম্পানিটির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মনজুর আহমেদ বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে প্রধান ভূমিকা রাখতে পারে বিমা। তবে সেক্ষেত্রে সকল কোম্পানিতে রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগ থাকা জরুরি। বিমার পলিসি থাকলে করসুবিধা পাওয়া যায়, এই তথ্যই অনেক নাগরিক জানেন না। বিমার সুবিধাগুলো সকল নাগরিকদের নিকট জানাতে পারলে সবাই আগ্রহ পাবে বলে মনে করেন তিনি।
কোম্পানিটির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ বলেন, বিমাদাবি পরিশোধের হার ৭০ শতাংশের বেশি। মাত্র দুই তিনটা কোম্পানির কাছে মার্কেটের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। যারা ভালো করছে তাদের বিষয়ে গণমাধ্যম ইতিবাচক সংবাদ পরিবেশন করলে বিমা খাতের উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিও শক্তিশালী হবে।
চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স ব্যক্তিগত জীবন বিমা পলিসি এবং গ্রুপ জীবন বিমা পলিসি বিক্রি করে। বর্তমানে, কোম্পানিটি সারাদেশে ৩৫টি সেলস অফিস, ২৪টি শাখা অফিস এবং ১৫টি ইউনিট অফিসের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করছে।
২০২২ সালে চার্টার্ড লাইফ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধনের পরিমাণ ২৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৩৭.৫০ কোটি টাকা।