নিউজ ডেস্ক : কমনওয়েলথ সদস্য দেশগুলো থেকে আরও বেশি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে ‘বিশেষ নীতি’ সহায়তার সুবিধা দিতে বাংলাদেশ প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
বুধবার কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরামের সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
সেমিনারে সালমান এফ রহমান আরও বলেন, বিশ্বের স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া সমুদ্রপথ নিয়ন্ত্রণ ও বৈশ্বিক বাণিজ্যের প্রতিযোগিতায় বঙ্গোপসাগর একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে অবদান রাখছে। কমনওয়েলথে অর্থনীতিগুলো বাণিজ্য বা উৎপাদন একত্রিত করার সুযোগগুলোকে কাজে লাগাতে পারে।
ঢাকায় প্রধান অতিথি হিসেবে কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরামের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিলের (সিডব্লিউইআইসি) সহযোগিতায় বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো সম্মেলনের আয়োজন করছে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং জি ফাউন্ডেশন সম্মেলনের অংশীদার। দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর ১৩ জন মন্ত্রীসহ ৩০০ জনের বেশি আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন।
সালমান বলেন, উন্নত বিশ্ব এবং উন্নয়নশীল অর্থনীটির মধ্যে সংযোগকারী হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বঙ্গোপসাগরের অন্যতম অঞ্চল বাংলাদেশ।
ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ অপরচুনিটি–কমনওয়েলথ পার্টনারশিপ’ শীর্ষক সেমিনারে সালমান এফ রহমান আরও বলেন, এই বছরের শেষ নাগাদ বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ৪৮৫ মার্কিন ডলারে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। অর্থনীতির চালিকাশক্তি পোশাক রপ্তানি, স্থিতিস্থাপক রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং স্থিতিশীল অর্থনৈতিক পরিস্থিতি গত এক দশক ধরে প্রবৃদ্ধিকে ধরে রেখেছে।
সেমিনারের শুরুতে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ সম্পর্কে একটি উপস্থাপনা করা হয়।
উদ্বোধনী বক্তব্যে সিডাব্লিউআইসি চেয়ারম্যান লর্ড মারল্যান্ড বলেন, বাংলাদেশ কমনওয়েলথ দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ নিতে পারে।
মারল্যান্ড বলেন, বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানির মাধ্যমে বিশ্বে তার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে। কমনওয়েলথের দেশগুলো বাংলাদেশের পোশাকশিল্প থেকে শিখতে পারে। কমনওয়েলথের মাধ্যমে সব সম্ভাবনাকে সহযোগিতা করতে চাই। প্রায় দুই দশমিক ৫ বিলিয়ন মানুষের আবাসস্থল কমনওয়েলথ দেশগুলো উন্নত অর্থনীতি এবং উন্নয়নশীল উভয়কে এক জায়গায় নিয়ে এসেছে।
প্যানেল আলোচনায় ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম, ইউনিলিভার বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট জাভেদ আখতার এবং ব্রিটিশ ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শ্রীনি নাগরাজন। বিবিসি ব্রডকাস্টার তানিয়া বেকেট সেশনটি পরিচালনা করেন।
দিনের দ্বিতীয় অধিবেশনে ‘বৈশ্বিক অর্থনীতি: বাণিজ্যে বাধা ব্রেকিং ডাউন’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ডমিনিকা সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ভিন্স হেন্ডারসন।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন শ্রীলঙ্কার বিনিয়োগ প্রচারের প্রতিমন্ত্রী দিলুম এস আমুনগামা, ক্যামেরুন সরকারের অর্থমন্ত্রী লুই পল মোতাজে।
পরে বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় ‘কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য: একটি ইতিবাচক কর্ম পরিবেশ সৃষ্টি’ শীর্ষক আরেকটি অধিবেশন। সেশনে অংশ নেন যুক্তরাজ্যের এমপি পল ব্রিস্টো এবং ইনস্টিটিউট অব অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেলথের হেড অব স্ট্র্যাটেজিক এনগেজমেন্ট অ্যালান স্টিভেনস এবং জেডআই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান জিল্লুর হোসেন।
কমনওয়েলথ নামে পরিচিত কমনওয়েলথ অফ নেশনস ৫৬টি সদস্য রাষ্ট্রের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা, যার বেশিরভাগই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রাক্তন অঞ্চল।