আমরা এগিয়ে যাই, বিএনপি থাক ধ্বংস নিয়ে: প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক : দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির ধ্বংসাত্মক রাজনীতির কঠোর সমালোচনা করেছেন। মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) মাওয়া প্রান্তে পদ্মা রেল সেতু উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে এ সমালোচনা করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে বলেন, আমাদের লক্ষ্য দেশকে আরও উন্নত করা। এ জন্য নানা উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। আর বিএনপি ধ্বংস নিয়েই আছে। তারা রেল উপড়ে ফেলা, বাসে আগুন, মানুষের জান-মাল ধ্বংস করেছে। তারা এই ধ্বংসের মধ্যেই থাকবে। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাবো।

সরকার প্রধান বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। একজন ব্যক্তি, একটা ব্যাংকের এমডি থাকতে পারবে না, বলেছিলাম। যদিও তিনি জগৎ বিখ্যাত। তার কারণে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন করবে না বলেছিল বিশ্বব্যাংক। বলেছিলাম, নিজের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করবো, করেছি।

তিনি বলেন, মাঝে মাঝে দুঃসময় আসে। বিশ্বব্যাপী দুঃসময়ে আমাদের কাছেও আসে। এ জন্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। নিজের উৎপাদনে নিজেরা চলবো। জাতির পিতার বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে চলবে।

আওয়ামী লীগ সরকার আছে বলেই এদেশে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় দাবি করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আজকে যারা ভোটের কথা বলে, অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের ধোয়া তুলে প্রতিদিন আমাদের হটায়। তারা কখনও অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় না। কারণ তাদের প্রতিষ্ঠা হয়েছে একটা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর হাত থেকে। যে কারণে তারা ভোট চুরি ছাড়া কোনোদিন ক্ষমতায় আসে নাই। যে কারণে ২০০৮ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ৩০০ সিটে পেয়েছে মাত্র ২৯টা সিট। তারপর থেকে তারা নির্বাচন বয়কট, নির্বাচন নিয়ে খেলা শুরু করেছে। অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষ হত্যা, মানুষের জীবন নিয়ে খেলা এই ধ্বংসযজ্ঞ নিয়ে মেতে আছে। বাঙালি জাতিকে আহ্বান করবো, তাদের ভাগ্য নিয়ে যেন কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে। আমরা ৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন করবো।

এসময় অনাবাদি জমি আবাদের আওতায় আনতে প্রধানমন্ত্রী আবারও আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে ৮ লাখ ৪০ হাজার ভূমিহীন ও গৃহহীনকে ভূমি ও গৃহ দিয়েছি। মডেল মসজিদ করে দিয়েছি সব জেলা উপজেলায়।

তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য দেশকে আরও উন্নত করা। ছাত্র ছাত্রীদের বিনামূল্যে বই দিচ্ছি। আড়াই কোটি শিক্ষার্থী বৃত্তি-উপবৃত্তি পাচ্ছে। যাতে দেশটা এগিয়ে যায়। ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, এখন আমাদের লক্ষ্য, স্মার্ট বাংলাদেশ। প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। ল্যাব করে দিয়ে কম্পিউটার শিক্ষা দিচ্ছি। লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং কর্মসূচির মাধ্যমে ৬ লক্ষ্য ফ্রিল্যান্সারকে প্রশিক্ষিত করছি। তারা ইউনিয়নে বসে দেশ বিদেশের কাজ করে উপার্জন করছে।

শেখ হাসিনা বলেন, রেলের সার্বিক উন্নয়নে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। আমরা সাড়ে ১৪ বছরে ৮৭৩ কিলোমিটার নতুন রেল লাইন নির্মাণ করেছি। ২৮০ কিলোমিটার মিটারগেজ রেলপথকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর করা হয়েছে। ১৩৯১ কিলোমিটার লাইন পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। এক হাজার ৩৭টি নতুন রেল সেতু নির্মাণ ও ৭৯৪টি রেল সেতু পুনর্নির্মাণ করেছি। ১৪৬টি নতুন স্টেশন ভবন নির্মাণ ও ২৩৭টি স্টেশন ভবন পুনর্নির্মাণ করেছি। অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় গুরুত্ব দিয়েছি। আশা করি, ৩ থেকে ৪ বছরেরর মধ্যে বাংলাদেশে রেল যোগাযোগ আরও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে।

তিনি বলেন, ২১ বছর পর আমরা সরকার গঠন করি। তখন থেকেই জনগণের সেবা শুরু করি। এর আগের ২৯ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা কেনো মানুষের জন্য কিছু করতে পারেনি? আসলে তারা স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করে না। তারা চায় না, স্বাধীন দেশটি এগিয়ে যাক।

রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, চীনের রাষ্ট্রদূত ও রেল সচিব হুমায়ুন কবির প্রমুখ।

এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর বোন শেখ রেহানা, মন্ত্রীপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের নেতাসহ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাংলাদেশের সঙ্গে সব সময় বাণিজ্যিক সম্পর্ক ভালো থাকবে: চীনের রাষ্ট্রদূত
পরবর্তী নিবন্ধমাওয়া থেকে ট্রেনে ভাঙ্গা গেলেন প্রধানমন্ত্রী