নিউজ ডেস্ক : দেশের রিজার্ভ ১০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামলে বিপদ হতে পারে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান। তিনি বলেন, রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকলে একসময় যদি তা ১০ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে, সেই সময় এমন হতে পারে যে আইএমএফের সহায়তা পাওয়া যাবে না।
সোমবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামে (ইআরএফ) ‘অধ্যাপক রেহমান সোবহানের সঙ্গে সংলাপ’ শীর্ষক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রেহমান সোবহান বলেন, বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ৪৫ বিলিয়নের বেশি। কিছুদিন আগেও বলা হয়েছিল ২৪ বিলিয়ন ডলার এখন বলা হচ্ছে ১৮ বিলিয়ন ডলার। এখন দেশের রিজার্ভ যা আছে, তার চেয়ে কমে গেলে বিপদ হতে পারে। আর যদি ১০ বিলিয়নের কমে চলে আসে তবে বিশ্বব্যাংক, কিংবা আইএমএফের ঋণ সহায়তা নাও পেতে পারে বাংলাদেশ। রিজার্ভ যদি ১০ বিলিয়ন ডলারও হয়, তবে নীতি-নির্ধারকদের রিজার্ভ বাঁচাতে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
রেহমান সোবহান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি নিঃসন্দেহে শ্রীলঙ্কার চেয়ে ভালো অবস্থায় আছে। তারপরও শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ কমার সঙ্গে বাংলাদেশের রিজার্ভ কমার ধারাবাহিকতা রয়েছে। আমাদের বড় একটি রপ্তানি খাত আছে। সেই সঙ্গে আছে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়, যা শ্রীলঙ্কার চেয়ে অনেক বেশি। সে কারণে বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কখনো শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি না।
তিনি বলেন, দেশে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় কমে যাচ্ছে। তবে তার মানে এই নয় যে দেশে প্রবাসী আয় আসা বাস্তবে কমে গেছে; আনুষ্ঠানিক পথে না এসে অনানুষ্ঠানিক পথে আসছে প্রবাসী আয়, যার মূল মাধ্যম হুন্ডি। অর্থাৎ রিজার্ভ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা না হয়ে হুন্ডিতে জমা হচ্ছে, যা বাংলাদেশের বাইরে জমা হচ্ছে। যারা বিদেশে অর্থ পাচার করেন, তাদের জন্য এটা সুবিধাজনক হয়েছে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান বলেন, দেশের আর্থিক খাতের সংস্কৃতিতে বড় পরিবর্তন এসেছে। ঋণ নেওয়ার পর ফেরত না দেওয়াটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। এটা করার জন্য বড় ব্যবসায়ী নয়; বরং যারা এসব করছেন, তারা নিজেদের বড় রাজনীতিক হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন।
