নিউজ ডেস্ক : পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, দুই যুগের বেশি সময় ধরে পুঁজিবাজারকে পিছিয়ে রাখা হয়েছিল। তবে বর্তমানে বাজার এগিয়ে যাচ্ছে। বাজারের উন্নয়নে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বাড়ানো ও মিউচুয়াল ফান্ডের উন্নয়নে কাজ করতে হবে।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডে (ডিএসই) রিং দ্যা বেল অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের লেনদেন শুরু হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু।
এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ক্যাপিটেক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান হাসান রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান, ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান এবং ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশর (আইসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল হোসেনসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক ইতিমধ্যে ব্যাংক খাতে বিশেষ অবদান রেখেছে। এই প্রথম তারা মিউচুয়াল ফান্ডে শত কোটি টাকার বিনিয়োগ করেছে। আশা করছি তারা এ ধরনের ফান্ডে আরও বেশি বিনিয়োগ করবে। এ ধরণের বিনিয়োগ বাজারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, অর্থনীতির আকার এখন অনেক বড় হচ্ছে। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে আরও ভালো অবস্থানে যাবে। রিটেইলারদের মিউচুয়াল ফান্ডে আগ্রহ বাড়ানোর জন্য কাজ করতে হবে। এতে মার্কেট অনেক লাভবান হবে।
বিএসইসির কমিশনার ড. মিজানুর রহমান বলেন, আমরা গত সাড়ে তিন বছরে বেশ কিছু মিউচুয়াল ফান্ডের অনুমোদন দিয়েছি। ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের আকার ১৫৬ কোটি টাকা। এই ফান্ডে স্বচ্ছতার জায়গা নিশ্চিত করেছি। আমাদের মূল উদ্দেশ্য বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করা। দিনশেষে বিনিয়োগকারী লাভের হিসাব করবে।
ডিএসইর এমডি ড. এ টি এম তারিকুজ্জামান বলেন, ক্যাপিটেকের আরও তিনটি ফান্ড রয়েছে। এতেই বোঝা যাচ্ছে তারা অনেক প্রফেশনাল। আশা করছি এই ফান্ডটিও তারা অনেক ভালোভাবে ম্যানেজ করতে পারবে।
ক্যাপিটেক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান হাসান রহমান বলেন, আমরা চেষ্টা করছি ভালো লভ্যাংশ দেওয়ার। বর্তমান কমিশন মিউচুয়াল ফান্ডে কর্পোরেট সুশাসন নিশ্চিত করেছে। এই ফান্ডেও আমরা কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করার চেষ্টা করবো।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গত ১৪ আগস্ট পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তার ৮৮০তম কমিশন সভায় ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের প্রসপেক্টাস অনুমোদন করে। ফান্ডটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আছে ক্যাপিটেক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড। আর এর ট্রাস্টি ও কাস্টোডিয়ানের দায়িত্ব পালন করছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ সংস্থা আইসিবি।
প্রাথমিকভাবে ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০০ কোটি টাকা। ফান্ডটির উদ্যোক্তা এতে ১০০ কোটি টাকা জোগান দিয়েছেন। বাকি ১০০ কোটি টাকা আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে সংগ্রহ করার কথা। কিন্তু আইপিওতে নির্ধারিত ইউনিট বিক্রি না হওয়ায় ফান্ডটির আকার দাঁড়িয়েছে ১৫৬ কোটি টাকা।
ফান্ডটি ডিএসইতে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন শুরু করবে। ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের ট্রেডিং কোড হবে ‘CAPITECGBF’। ডিএসইতে ফান্ডটির ট্রেডিং কোড হবে ১২২০৫।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) ফান্ডটির বরাদ্দপ্রাপ্ত ইউনিট বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে জমা হয়েছে। তার আগে গত সোমবার (৯ অক্টোবর) যোগ্য বিনিয়োগকারী ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ইউনিট বরাদ্দ করা হয়েছে। ইলেক্ট্রনিক সাবস্ক্রিপশন সিস্টেমের (ইএসএস) মাধ্যমে যোগ্যতাসম্পন্ন ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ইউনিট বরাদ্দ করা হয়।
আইপিওতে বিনিয়োগকারীদের জন্য ফান্ডটির ১০০ কোটি টাকার ইউনিট সংক্ষিত ছিল। এর বিপরীতে ৫৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকার ইউনিট কেনার জন্য আবেদন জমা পড়ে। সংক্ষিত ইউনিট সংখ্যার চেয়ে কম আবেদন জমা পড়ায় প্রত্যেক আবেদনকারী শতভাগ ইউনিট বরাদ্দ পেয়েছেন।