কক্সবাজার প্রতিনিধি : দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে আজ থেকে চালু হল ঢাকার সাথে পর্যটন নগরী কক্সবাজার রেল চলাচল। সকালে টিকিট কেটে চট্টগ্রামের দোহাজারী-কক্সবাজার রেল চলাচলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (১১ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে এ স্টেশন উদ্বোধন করেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে নেটওয়ার্কের ৪৮তম জেলা হিসেবে যুক্ত হয়েছে কক্সবাজার।
আজ বাংলাদেশের অন্যতম এক স্বপ্ন পূরনের দিন। সকালে সেই স্বপ্নকে সত্যি করতে ঢাকা কক্সবাজার রেল চলাচলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানায় একদল নৃত্যশিল্পী।
পরে প্রধানমন্ত্রী যোগ দেন কক্সবাজারে ঝিনুকের আদলে তৈরি আইকনিক রেল স্টেশনে সুধী সমাবেশে। উদ্বোধন করেন দেশের অন্যতম নান্দনিক এ স্টেশনের।
এ সময়, স্মৃতি চারণে কক্সবাজার ঘুরতে আসার গল্প শোনান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ বদলেছে অনেক। এলাকার মানুষকে কথা দিয়েছিলাম, কথা রাখলাম।
শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতার লোভে দেশের সম্পদ কারো হাতে তুলে দিতে দেয়া হবে না। বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষকে সেবা দিতে সব সময় কাজ করে। সাধারণ মানুষ যেন সহজে চলাচল করতে পারে সেজন্য রেলকে গুরুত্ব দিয়েছে সরকার।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় মানুষের সেবায় কাজ করে। স্পষ্ট জানান, ক্ষমতার লোভে দেশের সম্পদ কাউকেই নষ্ট করতে দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, ক্ষুধা, দরিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকার নিরলস কাজ করছে। এসময় দেশে ৪০ হাজার খাদ্য ঘাটতি ছিল। আমরা ক্ষমতায় আসার পর দেশে কোন খাদ্য ঘাটতি নেই।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, অনেক রেললাইন বন্ধ ছিল। সরকার ক্ষমতায় আসার পর সব রেললাইন চালু করি। কারণ, সাধারণ মানুষের জন্য রেলপথ সুবিধা। এতে আমরা লাভ ক্ষতি চাইনি।নবর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ৮৭৩ কিলোমিটার রেল লাইন স্থাপন করা হয়েছে।
সরকারপ্রধান বলেন, রেলে কক্সবাজার আসা যাবে। এটি অনেকের আকাঙ্ক্ষা ছিল। এখন পঞ্চগড় থেকে কক্সবাজারে আসার পথ সুগম হলো। আগামীতে সুন্দরবন থেকে কক্সবাজারে রেল আসবে। আমরা পদ্মাসেতু ও যমুনা সেতুর উপর রেললাইন চালু করেছি। আগামীতে রেলপথকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিরোধীদল চোখ থাকতে অন্ধ। আমি তাদের চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেন। সত্যি বলতে কি তাদের চোখের দোষ নয়, এটি মনের দোষ।
পরে ঘুরে দেখেন কক্সবাজার আইকনিক রেলওয়ে স্টেশনের চারপাশ।
এরপর টিকিট কেটে সফরসঙ্গীদের নিয়ে কক্সবাজার থেকে ট্রেনে চেপে যান রামু রেলওয়ে স্টশনে। আঁকাবাঁকা পথ আর সবুজের মাঝ দিয়ে চলে প্রধানমন্ত্রীর রেল বহর।
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার পূর্ব দিকে ঝিলংজা এলাকায় ২৯ একর জমিতে নির্মিত হয়েছে ছয়তলা ভবনের আইকনিক রেলস্টেশন। ১ লাখ ৮৭ হাজার ৩৭ বর্গফুট আয়তনের এই রেলস্টেশন ভবন নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২১৫ কোটি টাকা।