আগামী বছরও চাল রফতানি করবে না ভারত

নিউজ ডেস্ক : আগামী বছরও চাল রফতানিতে বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রাখতে পারে বিশ্বের শীর্ষ চাল রফতানিকারক দেশ ভারত। এটি বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

অর্থনৈতিক সাময়িকী ব্লুমবার্গ এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে।

বিগত এক দশকে ভারত বিশ্বের শীর্ষ চাল রফতানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে কম দাম ও পর্যাপ্ত মজুত থাকার কারণে। দেশটি বর্তমানে বিশ্বের মোট চাল রফতানির প্রায় ৪০ শতাংশ সরবরাহ করে থাকে। বেনিন ও সেনেগালের মতো আফ্রিকান দেশগুলো হচ্ছে ভারতীয় চালের শীর্ষ ক্রেতা।

কিন্তু নির্বাচনের আগে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে খাদ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে এবং ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় চাল রফতানির ওপর বেশ কয়েক দফায় বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

তবে নির্বাচনের পরও সরকার এ বিধিনিষেধ বজায় রাখবে – এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে নোমুরা হোল্ডিংস ইনকরপোরেটেডের ভারত ও এশিয়ার প্রধান অর্থনীতিবিদ সোনাল ভার্মা বলেন, যতদিন ভারতের অভ্যন্তরীণ চালের বাজার চাপের মুখে থাকবে, ততদিন এই বিধিনিষেধ থাকবে। এমনকি নির্বাচনের পরও যদি স্থানীয় বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে না আসে, তাহলে এসব বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও বাড়তে পারে।

প্রসঙ্গত, গত ২০ জুলাই বিশ্বের বৃহত্তম চাল রফতানিকারক দেশ ভারত বাসমতি ছাড়া অন্য সব চাল রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। দেশটির মোট চাল রফতানির প্রায় ৮০ শতাংশই হচ্ছে এই অন্য সব জাতের চাল। পরে ২৫ আগস্ট থেকে সিদ্ধ চাল রফতানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে দেশটি। এরপর বাসমতি চাল রফতানিতে টনপ্রতি ন্যূনতম দাম বেঁধে দেয় ভারত সরকার। ফলে টনপ্রতি কমপক্ষে ১ হাজার ২০০ ডলারে বাসমতি চাল রফতানি করতে হচ্ছে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের।

দেশটির এমন সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে গত আগস্ট মাসে চালের দাম ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে স্তরে উঠে যায়। অন্যদিকে, অনেক আমদানিকারক দেশের ক্রেতারা চাল আমদানি বন্ধ রেখেছেন, আবার কেউ কেউ ছাড়ের জন্যও অনুরোধ করেছেন। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মতে, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে বিশ্বব্যাপী চালের দাম গত বছরের একই সময়ে তুলনায় ২৪ শতাংশ বেশি।

মোদি সরকার স্থানীয় বাজারে চালের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিতের পাশাপাশি দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায় উল্লেখ করে রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট বিভি কৃষ্ণ রাও বলেন,

কাজেই সরকার আগামী বছরের ভোট হওয়া পর্যন্ত চাল রফতানিতে বিধিনিষেধ জারি রাখবে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, নয়াদিল্লিতে খুচরা পর্যায়ে চালের দাম বছর ব্যবধানে ১৮ শতাংশ বেড়েছে, আর গমের দাম বেড়েছে ১১ শতাংশ।

এদিকে, খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র ব্লুমবার্গকে জানিয়েছেন, সরকার খাদ্যের দামের ওপর কঠোর নজরদারি করছে এবং ভোক্তা ও কৃষকদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই রফতানি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহিলি বন্দরে একদিনে ৫৫ ট্রাক আলু আমদানি
পরবর্তী নিবন্ধপর্যটনে সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর