দাম কমেছে মুরগি-ডিম-পেঁয়াজের, বেড়েছে চাল-আলু-ডাল

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাজারে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে। সঙ্গে পেঁয়াজের দামও কেজিপ্রতি কমেছে ১০ টাকা।

অন্যদিকে বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে চালের দাম। আলুর দাম গত সপ্তাহে কিছুটা কমলেও এ সপ্তাহে আবার বেড়েছে। এদিকে বেড়েছে মসুর ডালের দাম।

শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা যায়।

সরেজমিনে কাঁচা বাজারে সবজির দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, টমেটো, গোল বেগুন, লম্বা বেগুন, করলা, পটল, লাউ, কাঁচা পেঁপে, শসা, গাজর, ফুলকপি, বরবটি, চিচিঙ্গা, মিষ্টি কুমড়া, ঝিঙ্গা, কচুর লতি, ঢেঁড়শ, লাউশাক, পালং শাক, লাল শাক, কলমি শাক, কচু শাকসহ সবধরনের শাক সবজির বাজার আগের মতোই চড়া। ৫০-৮০ টাকা কেজির নিচে কোনো সবজি নেই।

ঢেঁড়স, পটল, ঝিঙ্গা, করোলা, চিচিঙ্গা ৭০-৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, বরবটি ৭০-৮০ টাকা, কাঁচাকলা হালি প্রতি ৪০-৫০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাসের ব্যবধানে মোটা চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা। আর গত এক সপ্তাহে বেড়েছে কেজিতে প্রায় দুই টাকা। সঙ্গে এতোটা না বাড়লেও মাঝারি ও সরু চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১-২ টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মৌসুমের শেষ দিকে সরবরাহ কমায় বাজারে মোটা চালের দাম বাড়ছে। যদিও তথ্য বলছে, সরকারের গুদামে চালের মজুত পর্যাপ্ত। যে কারণে পাইকারি বাজারে একপক্ষের অভিযোগ- মিলারদের কারসাজির কারণেই মূলত চালের দামে উল্লম্ফন হয়েছে। মিল মালিকেরাই কৃত্রিম সরবরাহ সংকট তৈরি করেছে।

মুদি পণ্যের মধ্যে দেশি মসুর ডাল, ইন্ডিয়ান মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৪০ ও ১২৫ টাকায়, যার দাম গত সপ্তাহে ছিল ১৩০-১৩৫ টাকা এবং ১১৫ টাকা। এংকর ডাল ৬৮ টাকা, ছোলা ৯০ টাকা, ডাবলি ৬৮ টাকা, খোলা চিনিগুড়া চাল ১৩৫ টাকা, গুঁড়াদুধ ৭৮০ টাকা, তেল ১৭০ লিটার, ৫ কেজির বোতল রূপচাঁদা ৮০০ টাকা, পামঅয়েল ১৩৫ কেজি বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর বাজারগুলোতে এখন আলুর কেজি ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। যা সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ৫ টাকা বেড়েছে। মাঝে দাম কিছুটা নিম্নমুখী হলেও এখন আবার বাড়ছে। স্বাভাবিক সময়ে বছরজুড়ে এ আলুর দাম থাকে ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ, মানুষ বর্তমান দামের থেকে অর্ধেক দামে আলু কিনতে অভ্যস্ত।

খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, মৌসুম শেষ হওয়ার কারণে বাজারে আলুর সরবরাহ কম। এরমধ্যে ভারত থেকে আলু আমদানি হচ্ছে। তবে যে সামান্য পরিমাণে আলু এসেছে, তা চাহিদার তুলনায় খুবই কম।

এদিকে, ভারত থেকে ডিমও আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। তারও কিছুটা প্রভাব বাজারে রয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে বেশ কমেছে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। খুচরা বাজারে এখন প্রতি ডজন ডিম ১৩০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় বাজারে ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ১৩০ টাকা দরে। যা পাড়া-মহল্লার দোকানে ১৪০ টাকা।

ডিমের সঙ্গে ব্রয়লার মুরগির দামও কিছুটা কমেছে। বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া সোনালি জাতের মুরগির কেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে দেশি ও ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ ও ৯৫ টাকায়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছিল ১৩০ ও ১০০ টাকায়।

এদিকে, মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি বড় রুই মাছ ৩০০-৩৫০ টাকা, মাঝারি রুই মাছ ২৫০-২৭০ টাকা, কাতলা মাছ ৩০০-৩৫০ টাকা, বড় পাঙ্গাশ মাছ ২০০-৩০০ টাকা, পাবদা মাছ ৫০০-৬০০ টাকা, গলদা চিংড়ি আকারভেদে ৬৫০-৭৫০ টাকা ও শিং মাছ ৪৫০-৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ছোট, মাঝারি, বড় ইলিশ মাছ যথাক্রমে ৯০০, ১২০০ ও ১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ছোট কাচকি মাছ ৩০০ টাকা, মলা মাছ ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সামুদ্রিক মাছের দামও বেশ চড়া। প্রতি-কেজি বড় সাইজের সুরমা মাছ ৪০০-৫০০ টাকা, রূপচাঁদা আকারভেদে ৫০০-৮০০ টাকা, লাল কোরাল ৫০০-৬০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিশ্বকে এক থাকতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধউপকূল অতিক্রম করছে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’