নিউজ ডেস্ক : টানা সাত কার্যদিবস মূল্যসূচক বাড়ার পর রোববার দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। সেই সঙ্গে দাম বাড়ার তালিকায় যে কয়টি প্রতিষ্ঠান নাম লিখিয়েছে, তার প্রায় দ্বিগুণের দাম কমেছে। তবে বাজারটিতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম কমার থেকে দাম বাড়ার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ফলে এ বাজারটিতে প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
এর আগে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবস এবং তার আগের সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবস শেয়ারবাজারে মূল্যসূচক বাড়ে। এমন টানা বাড়ার পর এখন যে দরপতন হয়েছে তাকে স্বাভাবিক বলছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা।
তারা বলছেন, টানা সাত কার্যদিবস সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর কিছুটা পতন হওয়া স্বাভাবিক। কারণ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম টানা বেড়েছে। ফলে ওই সব শেয়ারে বিনিয়োগ থাকা বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নেওয়ার জন্য শেয়ার বিক্রি করেছেন। এতে বিক্রির চাপ বেড়ে কিছুটা মূল্য সংশোধন হয়েছে।
বাজার পর্যালোচনা দেখা যায়, রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৩ পয়েন্ট বেড়ে যায়। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকায় লেনদেনের প্রথম আধাঘণ্টা সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকে।
তবে এরপর এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা বিক্রির চাপ বাড়ান। ফলে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যায়। এতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। অবশ্য অল্প সময়ের মধ্যেই আবার দরপতন থেকে বেরিয়ে আসে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। এতে লেনদেনের দুই ঘণ্টার মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ৪ পয়েন্ট বাড়ে।
তবে দুপুর ১২টার পর থেকে এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা বিক্রির চাপ বাড়িয়ে দেন। এতে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যায়। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকে। ফলে একদিকে দাম কমার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে সবকটি মূল্যসূচক কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিতে পেরেছে মাত্র ৫৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১০০টির। আর ১৭৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রায় দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৫১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় দশমিক ২৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১১২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে পাঁচ’শ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৩৭ কোটি ৯১ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৪৫০ কোটি ২০ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৮৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৩ কোটি ৪১ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফু-ওয়াং সিরামিকসের ২৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২২ কোটি ১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এডভেন্ট ফার্মা।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বিডি থাই অ্যালুমেনিয়াম, ইয়াকিন পলিমার, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, মুন্নু সিরামিক, ফু-ওয়াং ফুড, এসকে ট্রিমস এবং সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫১টির এবং ১১৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১০ কোটি ৫২ লাখ টাকা।