কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে পৃথক সন্ত্রাসী হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও দুইজন।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত উখিয়া উপজেলার ৪ নম্বর, ১৫ নম্বর ও ১৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। বিষয়টি জানিয়েছেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন।
নিহত চারজন হলেন, মো. জোবায়ের (১৬), আনোয়ার সাদেক (১৭), আবুল কাশেম ও ইমাম হোসেন।
পুলিশ বলছে, আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে মিয়ানমারের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি আরসার সদস্যরা এ হামলা চালিয়েছে। হত্যাকাণ্ডের শিকার চারজন আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন আরএসওর সদস্য।
উখিয়া থানার ওসি মো.শামীম হোসেন বাংলানিউজকে জানান, মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে আরসার ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী ১৫ নম্বর জামতলী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সেখানকার অপর রোহিঙ্গা গ্রুপ আরএসওর সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এ সসময় চারজন রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ ও গুরুতর আহত হন।
আহতদের ক্যাম্পে অবস্থিত এমএসএফ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মো. জোবায়ের (১৬) এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর আনোয়ার সাদেক (১৭) নিহত হন।
মো. জোবায়ের ১৫ নম্বর ক্যাম্পের জি ৩ ব্লকের মোহাম্মদ আলী ও আনোয়ার সাদেক একই ক্যাম্পের মোহাম্মদ শফিকের ছেলে। এ সময় আহত দুই রোহিঙ্গাকে এমএসএফ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ওসি শামীম হোসেন আরও জানান, রাত ৯টার দিকে আরসার একদল সন্ত্রাসী ১৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সি ব্লকে গিয়ে আবুল কাশেম নামে এক রোহিঙ্গাকে তার বাড়ি থেকে বের করে উপর্যুপরি গুলি করে হত্যা করে। আবুল কাশেম ওই ক্যাম্পের আবুল বশরের ছেলে।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পে আরসার বিরুদ্ধে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত ছিলেন বলে সাধারণ রোহিঙ্গারা জানায়। ধারণা করা হচ্ছে এর জের ধরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে।
ওসি বলেন, ঘটনার পরপরই মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এরও আগে, বিকেল ৪টার দিকে ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এফ/১৬ ব্লকে একদল দুষ্কৃতকারী ইমাম হোসেনকে সরাসরি গুলি করে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে এপিবিএন ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহও কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ চার হত্যাকাণ্ডের দুই দিন আগে বান্দরবানের একটি আদালতে আরসার প্রধান আতাউল্লাহ জুনুনি ও তার ৪৯ জন সহযোগীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।