নিউজ ডেস্ক : এক কার্যদিবস কিছুটা দাম বাড়ার পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার দেশের শেয়ারবাজারে আবার মিউচুয়াল ফান্ডের দরপতন হয়েছে। একই সঙ্গে অন্য খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমেছে। এতে মূল্যসূচকের মোটামুটি বড় পতন হয়েছে। পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
এর আগে বুধবার দেশের শেয়ারবাজারে হঠাৎ চমক দেখায় মিউচুয়াল ফান্ড। দীর্ঘদিন ধরে ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা বেশকয়েকটি মিউচুয়াল ফান্ড ফ্লোর ভেঙে ওপরে উঠে আসে। এমনকি একাধিক মিউচুয়াল ফান্ডের দাম দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ বাড়ে।
তবে বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) এসে সেই ধারার ছন্দ পতন ঘটে। ফ্লোর প্রাইসের ওপরে উঠে আসা অধিকাংশ মিউচুয়াল ফান্ড আবার ফ্লোর প্রাইসে ফিরে গেছে। একদিনের ব্যবধানে মিউচুয়াল ফান্ড এমন বিপরীত রূপ ধারণ করায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সার্বিক শেয়ারবাজারে।
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকয়টি মূল্যসূচক কমেছে। একই সঙ্গে দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে প্রায় দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠান।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বাড়ার মাধ্যমে। তার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে অন্য খাতের ওপরেও। ফলে লেনদেনের শুরুর দিকে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে।
তবে দুপুর ১২টার পর থেকে বাজারের চিত্র বদলে যেতে থাকে। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক মিউচুয়াল ফান্ড দাম কমার তালিকায় চলে আসে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে অন্য খাতের ওপরেও। ফলে সব খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দামে এক প্রকার ঢালাও দরপতন হয়।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিতে পেরেছে ৫৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৬টির। এছাড়া ১৯৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে ৬টি। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩টির।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম কমায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১২ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৪৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৩৬৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৯৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকয়টি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬২৬ কোটি ৯৬ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬৮৯ কোটি ৪৩ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৬২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৯ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অলিম্পিক এক্সেসরিজের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকার। ১৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, প্যাসিফিক ডেনিমস, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, কোহিনুর কেমিক্যাল এবং ইভিন্স টেক্সটাইল।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৮টির এবং ৯১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা।