বৈশ্বিক অস্থিরতার মধ্যেও স্থিতিশীল জ্বালানি তেলের দাম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ওপেক প্লাসের জ্বালানি তেল উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্ত ঘিরে বাজারে বিরাজ করছে অনিশ্চয়তা। এর পাশাপাশি বিশ্ব জ্বালানি তেলের বাজারে উদ্বেগ বাড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বল অর্থনৈতিক পরিস্থিতি। এসবের মধ্যেও মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক বাজারে স্থিতিশীল ছিল অপরিশোধিত তেলের দাম।

আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১৪ সেন্ট বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৭৮ দশমিক ১৭ ডলারে অবস্থান করছে। এ ছাড়া ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুডের দাম ১৫ সেন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি ব্যারেল ৭৩ দশমিক ১৯ ডলারে।

জ্বালানি তেলের দাম সামান্য বাড়ার বিষয়ে ওএএনডিএ-এর এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের সিনিয়র বাজার বিশ্লেষক কেলভিন ওং বলেন, ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিক পেরোনের পরও প্রয়োজন হলে ওপেক প্লাস বিশ্ববাজারে কম পরিমাণে তেল সরবরাহ করবে বলে মন্তব্য করেছেন সৌদি আরবের জ্বালানি মন্ত্রী। এর প্রভাবে জ্বালানি তেলের দাম কিছুটা বেড়েছে।

এর আগে সোমবার (৪ ডিসেম্বর) কিছু সময়ের জন্য অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়লেও আবারও তা পড়ে যায়। এদিন ব্রেন্ট ক্রুডের দাম শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ বা ৪৯ সেন্ট কমে প্রতি ব্যারেল নেমে ৭৮ দশমিক ৩৯ ডলারে। অপরদিকে ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুডের দাম শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ বা ৪২ সেন্ট কমে ব্যারেলপ্রতি ঠেকে ৭৩ দশমিক ৬৫ ডলারে।

এবিষয়ে সিএমসি’র বাজার বিশ্লেষক টিনা টেং বলেন, ওপেক প্লাসের সরবরাহ কমানোর পদক্ষেপে বাজারে প্রভাব পড়বে, এমন আশঙ্কায় সোমবার (৪ ডিসেম্বর) জ্বালানি তেলের দাম কমে যায়। এর পাশাপাশি এদিন তেলের দামে প্রভাব ফেলেছে মার্কিন ডলারের অবস্থান।

ডলারের মান বেশি থাকলে সাধারণত অন্যান্য মুদ্রায় তেল কিনতে হলে বিভিন্ন দেশকে বেশি পরিমাণে অর্থ গুণতে হয়। ফলে তাদের জন্য ব্যয়বহুল হয়ে উঠে জ্বালানি তেল।

উল্লেখ্য, বিশ্বের শীর্ষ তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো ‘দ্য অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম কান্ট্রিস’ যা ওপেক নামে পরিচিত। আবার ওপেকের বাইরে অন্যান্য তেল উৎপাদনকারী দেশ ও ওপেক সদস্যদের একত্রে ওপেক প্লাস নামে অভিহিত করা হয়।

গত সপ্তাহে ওপেক প্লাসের সদস্যরা সিদ্ধান্ত নেন যে আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকে বিশ্ববাজারে দৈনিক প্রায় ২ দশমিক ২ মিলিয়ন ব্যারেল তেল কম সরবরাহ করা হবে। এর মধ্যে সৌদি আরব ও রাশিয়ার সেচ্ছায় দৈনিক ১ দশমিক ৩ মিলিয়ন ব্যারেল তেল কম উৎপাদনের বিষয়টিও অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।

তাদের তেলের সরবরাহ কমানোর পদক্ষেপের কার্যকারিতা নিয়ে সংশয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। এর পাশাপাশি তারা উদ্বিগ্ন বৈশ্বিক ‍পণ্য উৎপাদন কর্মকাণ্ড নিয়েও। এতে গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ২ শতাংশেরও বেশি কমে যায়।

এদিকে আবারও শুরু হয়েছে ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ। যার কারণে আবার তেলের সরবরাহ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে উদ্বেগ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিজিবির ভূমিকা যথেষ্ট: মহাপরিচালক
পরবর্তী নিবন্ধপুঁজিবাজারে সূচক বাড়লেও লেনদেনে মন্দা