রেকর্ড মুনাফা রূপালী ব্যাংকের, ঋণ খেলাপি কমে উন্নতি সূচকে

নিউজ ডেস্ক : বিদায়ী বছরে রেকর্ড পরিচালন মুনাফা করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের রুপালী ব্যাংক পিএলসি। বিদায়ী ২০২৩ সালে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭০০ কোটি টাকা, যা আগের বছরের চেয়ে ৫৬০ শতাংশ বেশি বা সাড়ে পাঁচ গুণের বেশি।

আগের বছরে মুনাফা হয়েছিল ১০৬ কোটি টাকা। তথ্য রুপালী ব্যাংক সূত্রের।
তথ্য বলছে, মুনাফার পাশাপাশি খেলাপি ঋণ আদায়, আমানতের প্রবৃদ্ধি, ঋণ বিতরণ, নতুন হিসাব খোলা, লোকসানি শাখা কমানো, অটোমেটেড চালানসহ সব ক্ষেত্রের অর্জনে রেকর্ড করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের ব্যাংকটি।

নগদ আদায়ে ব্যাংকটির ইতিহাসের সর্বোচ্চ সফলতা এসেছে। ৫৫০ কোটি টাকা নগদ আদায়ে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ২২ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ১৬ শতাংশে। রূপালী ব্যাংকের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নেওয়া ইতিবাচক নানা উদ্যোগ এসব সফলতার চাবিকাঠি হিসেবে কাজ করেছে।

জানতে চাইলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, সেবার মান বাড়ানো, খেলাপি ঋণ আদায়ে সর্বোচ্চ মনোযোগ, সিএমএসএমই ঋণ বিতরণে অগ্রাধিকার এবং লো কস্ট-নো কস্ট ডিপোজিট সংগ্রহে জোর উদ্যোগ নেওয়ার ফলে এই ফলাফল এসেছে।

তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী বছরে নতুন হিসাব খোলার ক্ষেত্রেও রুপালী ব্যাংক বড় সফলতা দেখিয়েছে। আগের বছর পর্যন্ত যেখানে ৫১ বছরে মাত্র ২২ লাখ সক্রিয় একাউন্ট ছিল। সেখানে ২০২৩ সালে আট লাখের বেশি নতুন হিসাব যুক্ত হয়েছে। আস্থা ফেরায় ব্যাংকটিতে দীর্ঘদিন পর ফিরেছে বড় বড় করপোরেট ক্লায়েন্টরা। নতুন হিসাব খোলায় রেকর্ড করায় ইতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে ব্যাংকের স্বল্প সুদের ডিপোজিটের ক্ষেত্রেও। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমেছে উচ্চ সুদের আমানতের পরিমাণ, বেড়েছে স্বল্প সুদ ও সুদবিহীন আমানত।

রুপালী ব্যাংক বলছে, সাধারণ মানুষের আস্থা ফেরায় আমানতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ। যেখানে বছর জুড়ে বিভিন্ন ব্যাংক তারল্য সংকটে ভুগেছে সেখানে রূপালী ব্যাংকের আমানত বেড়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংক পরিচালনায় বর্তমানে দক্ষতার পরিচয় রেখে চলেছে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্র খাতের একমাত্র ব্যাংকটি। ব্যাংকটির দক্ষ ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নেতৃত্বে ট্রেজারি ম্যানেজমেন্টে রয়েছে উল্লেখযোগ্য সফলতা।

২০২৩ সালে ব্যাংকটির লোকসানি শাখার পরিমাণও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমেছে। লোকসানি শাখা কমে দাঁড়িয়েছে সাতে। এরআগে কখনও এত কম লোকসানি শাখা ব্যাংকটিতে ছিল না।

সুশাসন ফেরাতে দীর্ঘদিন পর ইতিবাচক অগ্রগতি হওয়া ও সর্বস্তরের কর্মকর্তাদের কাজে অনুপ্রাণিত করতে সক্ষম হওয়ার কারণে এ সব অগ্রগতি হয়েছে বলে মনে করছেন ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনায় উপযুক্তদের পদায়ন করায় এ সাফল্য। এতে সব ব্যাংকের সব অংশিজনরা সুফল পেতে শুরু করেছে।

১৯৮৬ সালে ব্যাংকটির শেয়ার মূলধনের ৯১ শতাংশ সরকারি মালিকানায় রেখে বাকি অংশ বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে নিয়োগ ও নতুন ঋণ বিতরণের বিষয়ে ধীর গতির কারণে আর্থিক বিভিন্ন সূচকে ধারাবাহিকভাবে পিছিয়ে পড়তে থাকে ব্যাংকটি। ২০২২ সাল থেকে ব্যাংকটি ইউটার্ন নিতে শুরু করেছে। সময়োপযোগী কিছু সিদ্ধান্ত বদলে দিয়েছে রূপালী ব্যাংকের আর্থিক চিত্র।

ব্যাংকটি এখন বেশি সুদের আমানত ছেড়ে কম সুদের আমানতের দিকে ঝুঁকছে। সিএমএসএমই ঋণ বিতরণ ও খেলাপি ঋণ আদায়ে জোর দেওয়াসহ নানা সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে আর্থিক উন্নতির কারণে সব সূচকে অগ্রগতি হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজনতা ব্যাংকের ৮০০তম বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত
পরবর্তী নিবন্ধবামডার নতুন অফিস উদ্বোধন