নিউজ ডেস্ক : ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণের পরেও পণ্য রপ্তানিতে ডিউটি ফ্রি ও কোটা ফ্রি সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য চীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
রোববার (২৮ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে আসলে এ আহ্বান জানানো হয়।
চলতি বছরের জুলাই-আগস্ট থেকে দেশটিতে আম রপ্তানি শুরু হতে পারে বলেও মন্ত্রী জানিয়েছেন।
বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, চীন আমাদের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী। চীন থেকে আমরা বেশি আমদানি করি, কম রপ্তানি করি। দেশটি বাংলাদেশ থেকে আম নিতে চায়। জুলাই বা আগস্ট মাসে আমরা আম রপ্তানি শুরু করতে পারি। আমাদের পক্ষ থেকে গম রপ্তানি নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, চীনে আমরা ৯৮ ভাগ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাই। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে ২০২৬ সালে উত্তরণের পর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার ইতিমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে এবং কৌশল নির্ধারণে কাজ করছে। বিভিন্ন দেশ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি বা প্রেফারেন্সিয়াল ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (পিটিএ) করার জন্য কাজ করছে। আমরা চীনের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানিয়েছি। তারাও এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কক্সবাজারে স্থানীয়দের তুলনায় রোহিঙ্গা বেশি। এতে নিরাপত্তা সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীন আগে থেকেই কাজ করছে। আমরা এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় গুরুত্ব দিয়েছি বেশি।
মিয়ানমারের সঙ্গে থাকা প্রত্যাবাসন চুক্তি রয়েছে। বিষয়টি এগিয়ে নেওয়ার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা চাই, রোহিঙ্গা ইস্যু যেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্পটলাইট থেকে হারিয়ে না যায়। এ বিষয়ে আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসা তিনটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গেই আলোচনা করেছি।
জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মিয়ানমারে যে অবস্থা প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুরু করার পরিস্থিতিতে নেই। আমাদের পরিকল্পনা কী এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি, সহসায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবো।
বিএনপি অভিযোগ করেছে এই সরকার জনগণের সরকার নয়, এই সরকার ভারত, চীন, রাশিয়ার সরকার। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আপনার প্রতিক্রিয়া কী জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, এই সরকার জনগণের সরকার। বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতি ও অভিনন্দন এরই মধ্যে প্রমাণ করেছে এই সরকার আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃতি পেয়েছে।
বৈঠকে নেপালের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন, বাণিজ্য সম্প্রসারণ নিয়েও আলোচনা হয় বলেও জানান মন্ত্রী।
এর আগে সকালে চীন ও নেপালের রাষ্ট্রদূত এবং জাতিসংঘ সমন্বয়ক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।