দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী কেউ সহিংসতার চেষ্টা করলেও সফল হবে না বলে জানিয়েছেন র্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন।
রোববার (৭ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, এখন পর্যন্ত রাজধানীতে কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। সুষ্ঠু পরিবেশে ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন সেই নিশ্চয়তা আছে।
তিনি আরও বলেন, অনেক আতঙ্ক থাকলেও শেষ পর্যন্ত তেমন কিছু ঘটেনি। নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার চেষ্টা করলেও কেউ সফল হবে না।
এর আগে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, পেশাদারিত্বের সঙ্গে প্রতিটি কেন্দ্রসহ সারা দেশে নির্বাচন কমিশনের অধীনে আমরা দায়িত্ব পালন করছি। ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য ভোটাররা উন্মুখ হয়ে আছেন। উৎসবের আমেজে শান্তিপূর্ণভাবে সারাদেশে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। এখন পর্যন্ত আমরা খবর পেয়েছি সব জায়গায় ভোটারের উপস্থিতি আছে। শান্তিুপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলছে।
ভোট প্রয়োগে যারা বাধা দেবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে পুলিশ প্রধান বলেন, নির্বাচন ঘিরে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করেছি। আমাদের সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দায়িত্ব পালন করছেন। নাশকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত, আমাদের সেই সক্ষমতা রয়েছে। দেশবাসীকে নিশ্চয়তা দিতে চাই, আপনারা ভোটকেন্দ্রে আসুন, ভোট দিন।
তিনি আরও বলেন, যদি কোনো ভোটার বাধার সম্মুখীন হন, অপরাধ কর্মকাণ্ড ঘটলে নিকটস্থ থানা কিংবা ৯৯৯-এ যোগাযোগ করবেন। আমাদের বিভিন্ন টিম সহায়তায় প্রস্তুত আছে।
এদিকে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেয়া শেষে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাচনের পরে সহিংসতার পরিবেশ সৃষ্টি হলে কমিশনের চাওয়া অনুযায়ী পেশাদারিত্বের সঙ্গে, নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
ইসির তথ্যানুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৯টি সংসদীয় আসনে ১ হাজার ৯৭০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইসিতে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে এই নির্বাচনে ২৮টি রাজনৈতিক দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১ হাজার ৫৩৪ জন প্রার্থী। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে আছেন ৪৩৬ জন। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ২৬৬ জন, জাতীয় পার্টির ২৬৫, তৃণমূল বিএনপির ১৩৫ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) ৬৬ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১২২ জন, জাতীয় পার্টির (জেপি) ১৩ জন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের ১০ জন প্রার্থী রয়েছেন।
নির্বাচনে নারী প্রার্থী হিসেবে রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৯০ জন। আর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও অন্যান্য মিলে ৭৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
২৯৯ আসনে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ২৪টি। এসব কেন্দ্রে ভোটকক্ষ ২ লাখ ৬১ হাজার ৯১২টি। সর্বশেষ প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৮৯ হাজার ২৮৯ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৬ কোটি ৭৬ লাখ ৯ হাজার ৭৪১ ও নারী ভোটারের সংখ্যা ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৮ হাজার ৬৯৯ জন। এ ছাড়া সারা দেশে এবার তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ৮৪৯ জন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন স্থানীয় ২০ হাজার ৭৭৩ জন পর্যবেক্ষক। এ ছাড়া দুই শতাধিক বিদেশি পর্যবেক্ষক থাকছেন। এদের মধ্যে থাকছেন বিদেশি গণমাধ্যমকর্মীও।