নিউজ ডেস্ক : আগামীতে রপ্তানি ১০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে উল্লেখ করে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য একটাই, ডাইভারসিফাইড প্রোডাক্টগুলোকে প্রমোট করা। সহজ ভাষায় বলতে, বিদেশে যদি একটি শপিংমল থাকে, সেখানে যেমন বাংলাদেশের গার্মেন্টস পণ্য থাকতে পারে, একইভাবে চামড়াজাত পণ্যসহ আমাদের তৈরি ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যও থাকতে পারে।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে সাপ্লাই চেইন ভালোভাবে তৈরি হয়েছে। এখানে আমরা যদি বাকি প্রডাক্টগুলো আনি তাহলে রপ্তানির ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ‘২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা-২০২৪’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সমাপনী অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মাধ্যমে গত ২১ জানুয়ারি থেকে বাণিজ্যমেলা শুরু হয়েছিল। মেলার শেষ দিন উপলক্ষে আয়োজকেরা এই সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, মেলার উদ্বোধনী দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে মেলাপ্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেছেন এবং বিভিন্ন পণ্য কিনেছেন, যা আমাদের অনেক বেশি অনুপ্রাণিত করে। প্রধানমন্ত্রী বর্ষপণ্য হিসেবে হস্তশিল্পকে প্রাধান্য দিয়েছেন। প্রথম মন্ত্রিসভায় তিনি আমাদের বলেছিলেন, বাংলাদেশ যেমন কূটনীতিতে এগিয়ে আছে, একই ভাবে বাণিজ্য কূটনীতি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
সামনের দিনে হস্তশিল্পকে নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী বাণিজ্যমেলায় হস্তশিল্পের জন্য বিশাল আকৃতির প্যাভিলিয়ন করা হবে।
আগামী বছর দ্বিতল মেলার আয়োজন করা হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মেলা প্রাঙ্গণের নিচতলায় স্টলগুলো থাকবে। আর দোতলায় কনফারেন্স হলে ব্যবসায়ীদের আরও বেশি দক্ষ করে গড়ে তুলতে বিভিন্ন রকমের কনফারেন্স বা সেমিনারের ব্যবস্থা করা হবে। এর মাধ্যমে বাণিজ্যে আমরা এক প্রকার ডাইভারসিফিকেশনের ব্যবস্থা করব।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। তিনি বলেন, আমরা বৈদেশিক মুদ্রার চাপে আছি। আগে যেমন একটা বিষয় ছিল, নিজের পণ্য নিজে তৈরি করব, কোথাও যাব না। কিন্তু এ বিষয়টা বর্তমানে কাজ করে না। মানুষের ওপর কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া যায় না। তারা তাদের পছন্দমতো পণ্য ব্যবহার করে। সেজন্য জনগণের কল্যাণে পণ্য বিভিন্ন যায়গা থেকে আমদানি করাতে হচ্ছে। আমাদের ব্যবসায়ীরা যদি রপ্তানির পরিমাণ বাড়াতে পারেন তাহলে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান। তিনি বলেন, মাসব্যাপী মেলায় লাখো দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখরিত ছিল। যেসব প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যমেলায় অংশ নিয়েছিল, সেসব প্রতিষ্ঠানকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। এই মেলাকে একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচনা করেন ব্যবসায়ীরা, যেখানে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পণ্যের প্রচারণা চালায়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী গত এক মাসে প্রমাণ করেছেন. তিনি একজন সফল মন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। তিনি দায়িত্ব নেওবার পর বাজার পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ অনেক বাড়ে। বাণিজ্যমেলার মাধ্যমে আগামী দিনে ব্যবসায়ীরা দেশের রপ্তানির পরিমাণ বাড়াবেন, এই আশা করছি।